আয়া-পরিচারকদের তথ্য যাচাইয়ের তোড়জোড় শুরু! ভাড়াটেদের জন্যেও বিশেষ ফর্ম পাঠাচ্ছে লালবাজার
আনন্দবাজার | ২৪ আগস্ট ২০২৫
নিউ গড়িয়ার ঘটনার পর শহরে আয়া, পরিচারকদের নিয়ে সতর্ক কলকাতা পুলিশ। তাঁদের তথ্য যাচাইয়ের তোড়জোড় শুরু হচ্ছে। থানায় থানায় বিশেষ ফর্ম পাঠাচ্ছে লালবাজার। ওই ফর্মে পরিচারক-পরিচারিকা, আয়া, গাড়ির চালকদের তথ্য নথিভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া, বিভিন্ন বাড়ির ভাড়াটেদের তথ্যও সংগ্রহ করবে পুলিশ।
নিউ গড়িয়ায় বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় আয়া আশালতা সর্দার এবং তাঁর সঙ্গী মহম্মদ জালাল মীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃদ্ধার গয়নাগাটি তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই আয়াকে নিকটবর্তী আয়া সেন্টার থেকে কিছু দিন আগেই নিয়োগ করা হয়েছিল। অভিযোগ, সদ্যনিযুক্ত আশালতা বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধ দম্পতিকে আক্রমণ করেন এবং তাঁদের টাকাপয়সা, গয়নাগাটি ছিনিয়ে নেন। তার পর বৃদ্ধাকে মেরে, হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখেন। পাশের ঘরের মেঝেতে পড়েছিলেন বৃদ্ধও। এই সময়ে জালালকে তিনি বাড়ির বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। দু’জনকেই ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা নিউ গড়িয়া-কাণ্ডের পরে লালবাজারের আধিকারিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন। শনিবার তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কী ভাবে সাধারণ মানুষ আয়া, পরিচারক, ভাড়াটেদের তথ্য আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন, আমরা কী ভাবে সময়মতো সেই তথ্য যাচাই করতে পারি, সে সব নিয়ে কথা হয়েছে। শীঘ্রই তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
এমনিতে বাড়ির পরিচারকদের তথ্য যাচাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে থানায়। কেউ চাইলে পরিচারকের তথ্য, নথি পুলিশের কাছে জমা দিয়ে আসতে পারেন। প্রয়োজনমতো তা যাচাই করা হয়। কিন্তু নিউ গড়িয়ার ঘটনার পর আয়াদের বিষয়টিও আলাদা করে নজরে এসেছে। সাধারণত অসুস্থ বা বয়স্ক নাগরিকদের দেখাশোনার জন্য আয়া নিয়োগ করা হয়। কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে বয়স্ক নাগরিকদের সুবিধার্থে ‘প্রণাম’ নামের বিশেষ প্রকল্প রয়েছে। সেখানকার তথ্য বলছে, ভারতে বয়স্ক নাগরিকদের ৩০ শতাংশই বাড়িতে একা থাকেন। তাঁদের নাম, ফোন নম্বর, জন্মতারিখ, থানার নাম আপলোড করার ব্যবস্থা ওয়েবসাইটে রয়েছে। এ বার থেকে নজরদারি আরও বাড়ানো হতে পারে।
লালবাজারের তরফে যে বিশেষ ফর্মের পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে আয়া, পরিচারক, গাড়ির চালক এবং ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহের জায়গা থাকবে। বাড়ি বাড়ি থেকে কী ভাবে সেই তথ্য সংগ্রহ করবে বিভিন্ন থানা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে যাঁরা বাড়িতে একা থাকেন, তাঁদের জন্য এই ফর্ম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।