• অপহরণ নয়, IIT খড়্গপুরে ভর্তির ‘গল্প’ সাজিয়ে পলাতক মুম্বইয়ের অর্জুন, চিন্তায় পরিবার
    এই সময় | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • অপহরণ নয়। স্বেচ্ছায় পালিয়েছেন মুম্বইয়ের বছর ১৯-এর পড়ুয়া অর্জুন পাটিল। এমনটাই মনে করছে রেল পুলিশ। ২১ অগস্ট ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলা স্টেশনে নামতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ঘাটশিলা প্ল্যাটফর্মের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে অর্জুনের ছবি। পরিবারের সদস্যদের সেই ভিডিয়ো দেখানোর পর অর্জুনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। কিন্তু কোথায় গেল অর্জুন? চলছে তল্লাশি।

    বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা ঠিক ১২টা নাগাদ মুম্বই-শালিমার এক্সপ্রেসে থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান অর্জুন। রবিবার দুপুরে খড়্গপুর থেকে ঘাটশিলাতে ডেকে অর্জুনের বাবা-মা, মামা ও কাকাকে দেখানো হয় ঘাটশিলা স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, রেল পুলিশের অনুমান একেবারে ঠিক। ফুটেজে যাঁকে দেখা গিয়েছে, তিনিই তাঁদের হারিয়ে যাওয়া অর্জুন! যদিও, রবিবার রাত অবধি অর্জুনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলেই জানিয়েছেন তাঁর মামা রমেশ ইমরূপ।

    রবিবার সন্ধ্যায় চাকুলিয় জিআরপি-র ওসি দয়ানন্দ দাস এই সময় অনলাইনকে বলেন, ‘রবিবার সকাল থেকেই ঘাটশিলা স্টেশন সংলগ্ন সমস্ত জায়গা থেকে শুরু করে আশেপাশের গ্রামগুলিতেও নিখোঁজ অর্জুন পাটিলের খোঁজ চালানো হচ্ছে। জিআরপি, আপিএফ এবং জেলা পুলিশ যৌথভাবে এই তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।’

    প্রসঙ্গত, জেইই অ্যাডভান্স (JEE Advance)-এর ফল বেরোনোর পর অর্জুন তাঁর বাবা রবীন্দ্রকুমার পাটিল ও মা মমতা পাটিলকে জানিয়েছিলেন, নিজের ক্যাটাগরিতে তাঁর র‌্যাঙ্ক হয়েছে ১৩২৯। এর কিছুদিন পর বাবা-মাকে অর্জুন জানান, আইআইটি খড়্গপুরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কর্তৃপক্ষের তরফে ভর্তির জন্য মেল পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন অর্জুন। ছেলের কথা বিশ্বাস করে, তাঁকে ‘ভর্তি’ করতেই বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল ৬টা ২৪ মিনিটে জলগাঁও স্টেশন থেকে শালিমার এক্সপ্রেসের ৩২নং কোচে উঠেছিলেন রবীন্দ্রকুমার পাটিল, তাঁর স্ত্রী মমতা পাটিল, ছেলে অর্জুন পাটিল এবং অর্জুনের মামা রমেশ ইমরূপ। মাঝপথেই ঘটে বিপত্তি!

    পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, ২১ অগস্ট ট্রেন যখন ঝাড়খণ্ডের টাটানগর স্টেশন পেরিয়ে ঘাটশিলা, চাকুলিয়ার দিকে ছুটছে ঠিক সেই সময়েই নিজের মোবাইল ফোন চার্জে বসিয়ে বাথরুমে যায় অর্জুন। ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা ঠিক ১২টা। প্রায় ১৫-২০ মিনিট কেটে যাওয়ার পরেও অর্জুন না ফেরায় তাঁর খোঁজ শুরু করেন বাবা-মা, মামা। ততক্ষণে ট্রেন পৌঁছে যায় চাকুলিয়া স্টেশনে। তবুও খোঁজ মেলেনি অর্জুনের। শেষমেশ বেলা দেড়টা নাগাদ খড়্গপুর স্টেশনে নেমে জিআরপি-র দ্বারস্থ হন তাঁরা। ছেলেকে অপহরণের মামলা দায়ের করেন রবীন্দ্রকুমার। খড়্গপুর জিআরপি 'জিরো এফআইআর' দায়ের করে তা স্থানান্তরিত করে চাকুলিয়া জিআরপি-তে। তদন্তে নামে রেল পুলিশ। অর্জুনের ছবি-সহ নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

    আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, অর্জুন পাটিল নামে কোনও পড়ুয়া আইআইটি খড়্গপুরে ভর্তির সুযোগ পাননি। আর অর্জুনকে যে মেল পাঠানোর দাবি করা হচ্ছে, সেই মেল আইডি আইআইটি খড়্গপুরের নয়। তা একটি ভুয়ো আইডি!

  • Link to this news (এই সময়)