• ডাক্তার পরিচয়ে ইঞ্জেকশন কম্পাউন্ডারের, মৃত্যু গর্ভস্থ সন্তানের, একবালপুরের নার্সিংহোমে তালা
    আজ তক | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • একে চিকিৎসক ছিল না। তার উপর সহকারী নিজেকেই RMO বলে পরিচয় দিয়ে ইঞ্জেকশন দেন। এর অল্প বাদেই অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন গর্ভবতী মহিলা। মৃত্যু হয় গর্ভস্থ সন্তানের।একবালপুরের সেই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। তালা ঝোলানো হল নার্সিংহোমের দরজায়।

    অভিযোগ, গর্ভবতী মহিলার ব্যথা কমানোর ইনজেকশন দিয়েছিলেন অভিযুক্ত সহকারী। এরপরেই মৃত্যু হয় গর্ভস্থ সন্তানের। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তদন্ত শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য কমিশন। দেখা যায় ঘটনার সময় হাসপাতালে চিকিৎসকই ছিলেন না। শুধু তাই নয়, তাঁর সহকারী নিজেরে RMO পরিচয় দিয়েই ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন। বিষয়টি স্পষ্ট হতেই সরাসরি পদক্ষেপ নিল স্বাস্থ্য কমিশন। নির্দেশে জানানো হয়েছে, আপাতত ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নার্সিংহোম বন্ধ রাখতে হবে। একই সঙ্গে পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। তাই স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারিণী মহিলাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।গাফিলতির অভিযোগ
    অভিযোগকারিণী পরিবারের দাবি, নার্সিংহোমে সেই সময় কোনও চিকিৎসকই উপস্থিত ছিলেন না। চিকিৎসকের বদলে একজন সহকারী রোগীকে দেখেন। ওই সহকারী নিজেকে আরএমও (RMO) পরিচয় দেন।

    অভিযোগ, অবিনাশ কুমার নামে ওই ব্যক্তি গর্ভবতী মহিলার প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লেখেন। তারপর নিজেই ইনজেকশন দেন। ইনজেকশন দেওয়ার পরই শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। এরপরেই মৃত্যু হয় গর্ভস্থ সন্তানের।

    পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হলে, তাঁরা স্বাস্থ্য কমিশনে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই তদন্ত শুরু হয়।নার্সিংহোমে তালা
    স্বাস্থ্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত বেলোনা নার্সিংহোম বন্ধ রাখা হয়েছে।

    প্রসূতির পরিবারের দাবি, চিকিৎসক না থাকা সত্ত্বেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি। উল্টে সহকারীর হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেন। সেই গাফিলতিতেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।তদন্ত শুরু
    স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু একটি অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
    অভিযোগকারিণী প্রসূতিকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।এলাকায় চাঞ্চল্য
    ঘটনার পর থেকে একবালপুর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে এর আগেও অসন্তোষ ছিল। এভাবে গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুতে ক্ষোভ আরও বেড়েছে।কমিশনের কড়া বার্তা
    স্বাস্থ্য কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, আগামিদিনেও সরকারি বেসরকারি যে কোনও ক্ষেত্রে এমন গাফিলতি বিন্দুমাত্র বরদাস্ত করা হবে না। হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক না থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন গর্ভবতী মহিলার পরিবারের সদস্যরা। স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নার্সিংহোম খোলা হবে না।
  • Link to this news (আজ তক)