সোমা মাইতি ও মৃত্যুঞ্জয় দাস: দুটি ভিন্ন ঘটনা। ভিন্ন জেলা। একজন গৃহবধূ। একজন তরুণ। মিল একটাই। একজনের দেহ তোলা হল কবর থেকে (body of young wife dug out from grave)। অন্যজনের দেহ ফেরানো হল শ্মশান (police stops funeral) থেকে। দুই ঘটনাই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করল। একদিকে, মৃত্যুর চার মাস পর কবর থেকে তোলা হল গৃহবধূর দেহ। রবিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) রঘুনাথগঞ্জের এক এলাকায় ওই বধূর দেহ তোলা হয়। অন্যদিকে, পারিবারিক অশান্তির জেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা বাঁকুড়ার (Bankura) এক যুবকের। মৃতদেহ সৎকার করতে নিয়ে যাওয়া হল শ্মশানে। খবর পেয়ে শ্মশান থেকে দেহ তুলে আনল পুলিস।
কবর ও শ্মশান
মৃত্যুর চার মাস পরে কবর থেকে তোলা হল এক গৃহবধূর দেহ। রবিবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রঘুনাথগঞ্জের তেঘরি হাজিপাড়া এলাকায় ওই গৃহবধূর দেহ তোলা হয়। তার পরই দ্বিতীয়বারের জন্য ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়া হয়। কবর থেকে দেহ ওঠানোয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কবরস্থানের কাছে প্রচুর মানুষের ভিড় লক্ষ করা যায়। পুলিসের উপস্থিতিতে কড়া নজরদারির মাধ্যমে দেহ কবর থেকে তোলা হয়।
কী ঘটেছিল?
খুন করার পরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ
গত ২৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ রঘুনাথগঞ্জের তেঘরি এলাকার ফাতেমা খাতুন নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলেও সেসময় মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরই স্বামী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন মৃতার বাবার বাড়ির লোকজন। গৃহবধূকে খুন করার পরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মৃত গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজন। অবশেষে রঘুনাথগঞ্জের বধূর দেহ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ প্রদান করে কলকাতা হাইকোর্ট। চারমাস পরে দেহ উঠিয়ে দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
রবিসকালে
আজ, রবিবার সকাল সকাল দেহ ওঠানোর ব্যবস্থা করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মৃতদেহ উঠানোর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। অভিযুক্ত স্বামী এজাজ আহমেদকে সঙ্গে নিয়েই দেহ কবর থেকে তোলা হয়। কবর থেকে দেহ তোলার সময় পুলিসের কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়।
যুবকের ঝুলন্ত দেহ
অন্য একটি ঘটনায় বাঁকুড়া জেলা বিষ্ণুপুর ব্লকের বেলসুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জিয়াবান্দি এলাকায় সাত সকালেই এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। শ্মশান থেকে ওই যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করে নিয়ে পুলিস।
বাবার সঙ্গে ঝগড়া
মৃত যুবকের নাম মানস দত্ত, বয়স ২২ বছর। তাঁর পরিবার সূত্রে জানতে পারা গিয়েছে, নিজেদের দোকানে কাজ সেরে ওই যুবক বাড়িতে এলে হিসাব-নিকাশ নিয়ে বাবার সঙ্গে অশান্তি হয় তাঁর। এরপর রাতের খাবার খেয়ে নিজের ঘরে ঘুমোতে যান মানস। আনুমানিক রাত্রি দশটা নাগাদ নিজের ঘরে সিলিং পাখার সঙ্গে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই যুবক হলে অনুমান। সকালে অনেক বেলা হলেও মানস ঘরের দরজা না খোলায় পরিবারের সন্দেহ হয়। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন গলায় দড়ি নিয়ে ঝুলছে মানস। দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান পরিবারের লোকজন।
শ্মশান থেকে হাসপাতালে
মৃতদেহ সৎকারের জন্য স্থানীয় একটি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবকের দেহ। মৃত যুবকের পায়ে আলতা পরিয়ে সৎকার্যের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এরপর মৃত্যুর ঘটনার কথা জানতে পারে বিষ্ণুপুর থানার পুলিস। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্মশান থেকে ওই মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে তারা। বিষ্ণুপুর থানা পুলিস ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করে মৃত্যুর কারণ তদন্ত শুরু করেছে।