• দিনে ৫২ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ছে ডিভিসি, বিপদসীমার উপর বইছে রূপনারায়ণ ফের বানভাসির শঙ্কা আরামবাগে
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: টানা কয়েকদিনের বর্ষণে ফের ফুঁসতে শুরু করেছে রূপনারায়ণ। রবিবার সকালে রূপনারায়ণ নদের জলস্তর প্রাথমিক বিপদসীমা অতিক্রম করে যায়। জল বেড়েছে দ্বারকেশ্বর, মুন্ডেশ্বরী ও দামোদরেও। অন্যদিকে, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ডিভিসি এদিন সকাল থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়েছে। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ৫২ হাজার ৫৫০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে ডিভিসির তরফে। সেই জল দামোদর ও মুন্ডেশ্বরী নদী দিয়ে নামবে। জুলাই মাসের প্রথম দিক থেকে অতিবর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তার জেরে নাজেহাল আরামবাগ মহকুমার নিচু এলাকার বাসিন্দারা। শনিবার গভীর রাতে খানাকুলের রামমোহন ২ পঞ্চায়েতের সেকেন্দারপুরে একটি কাঁচাবাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বাসিন্দারা। কিন্তু বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় শেখ নাসিরুদ্দিন পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। পেশায় দর্জি নাসিরুদ্দিন বলেন, আবাস প্রকল্পে আমার নাম রয়েছে। কিন্তু এখনও বাড়ি পাইনি। প্রশাসন কিছু খাবার দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাড়ির ব্যবস্থা না হলে পরিবার নিয়ে কোথায় থাকব জানি না। এখন ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছি। খানাকুল ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মিন্টু পাল বলেন, কাঁচাবাড়িটির দু’টি দেওয়াল ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া মাত্রই পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা নাসিরুদ্দিনের কাছে যান। তাঁরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। দ্রুত পরিবারটির জন্য ত্রিপল সহ খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে। পরিবারটির বাংলার বাড়ির তালিকায় নামও রয়েছে। তহবিল দেওয়ার ব্যাপারেও সরকারি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সেচদপ্তরের হুগলি জেলার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবেন্দ্র সিংহ বলেন, রূপনারায়ণের জলস্তর প্রাথমিক বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। বাঁকুড়ায় গত দু’ দিনে বৃষ্টিপাতের জেরে জল বেড়েছে নদে। তবে এখন বৃষ্টি কমে গিয়েছে। তাই এবার আতঙ্কের আশঙ্কা নেই। বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ মেরামতি হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি। খানাকুল ২ বিডিও মহম্মদ জাকারিয়া বলেন, রূপনারায়ণ নদে জল কিছুটা বেড়েছে। এখনও মারোখানা, জগৎপুর পঞ্চায়েত এলাকার নিচু এলাকায় মাঠে জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। ডিভিসি জল ছাড়া বাড়ালে সমস্যা হতে পারে। সব ধরনের সতর্কতা নেওয়া রয়েছে। পঞ্চায়েতগুলিকেও অ্যালার্ট করা হয়েছে। 

    উল্লেখ্য, গত জুলাই মাস থেকে অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয় খানাকুল ২ ব্লকের নিচু এলাকাগুলিতে। চলতি আগস্ট মাসেও নতুন করে কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। খানাকুলের পাশাপাশি আরামবাগ মহকুমার অন্যান্য জায়গাতেও জল যন্ত্রণায় ভুগতে হয় বাসিন্দাদের। মাস খানেক পর দুর্গাপুজো। তার আগে ফের জল যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়তে পারেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই নিচু এলাকাগুলিতে এবার মার খেয়েছে আমন ধানের চাষ। ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকার চাষিরা। খানাকুলের গড়েরঘাটের বাসিন্দা রমেশ দলুই বলেন, এখন নদীতে জল বেড়েছে। ডিভিসির জল ছাড়ার প্রভাব সোমবার থেকে পড়তে পারে।  সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলায় ভালোমাত্রায় বৃষ্টি হয়েছে। সেই জল দ্বারকেশ্বর নদ দিয়ে আরামবাগ হয়ে নামছে খানাকুলে।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)