• বাঁকুড়া জেলায় কালাজ্বরের হদিশ, আক্রান্ত ওন্দার প্রৌঢ়, যৌথ মেডিক্যাল টিম গ্রামে, রক্তের নমুনা সংগ্রহ
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার ওন্দায় কালাজ্বরে আক্রান্তের হদিশ মেলায় স্বাস্থ্যদপ্তরে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে। পাথরপুকুর গ্রামের ওই আক্রান্ত প্রৌঢ় এখন ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জেলার ইতিহাসে এই প্রথম কেউ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন এবিষয়ে সক্রিয় হয়েছে। কলকাতা থেকে বাঁকুড়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠানো হয়েছে। ওই চিকিৎসককে নিয়ে পাথরপুকুর গ্রামে মেডিক্যাল টিম বসিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। শনিবার থেকে আগামী একসপ্তাহ ধরে ওই শিবির চলবে।

    বাঁকুড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, জেলার ইতিহাসে অতীতে কেউ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়নি। এই প্রথম বছর ৫০-এর ওই ব্যক্তি কালাজ্বরে আক্রান্ত হলেন। তাই আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পাথরপুকুর গ্রামে আর কেউ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কি না-তা জানতে সেখানে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। ওই টিমে রাজ্যের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন। তিনি বাঁকুড়ারই বাসিন্দা। ফলে জেলায় যেসব অসুখবিসুখ হয়, সেবিষয়ে বিশদে জানেন।

    শ্যামলবাবু জানান, কালাজ্বর একটি পতঙ্গবাহিত রোগ। ‘স্যান্ড ফ্লাই’ নামে এক বিশেষ ধরনের মাছি ওই রোগের জীবাণু বহন করে। ওই মাছির কামড়ে কালাজ্বর ছড়ায়। আক্রান্ত প্রৌঢ় সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড লাগোয়া কোনও এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁর শরীরে এই রোগ বাসা বেঁধেছিল কি না-তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    বাঁকুড়া বরাবর ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। সেইসঙ্গে এই জেলায় ডেঙ্গু সহ অন্য মশাবাহিত রোগের প্রকোপও লক্ষ্য করা যায়। স্ক্রাব টাইফাস রোগে আক্রান্তের হদিশও মিলেছে। তবে কালাজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। ফলে বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রশাসনিক মহলে শোরগোল পড়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা ওই প্রৌঢ়ের ভ্রমণ-সম্পর্কিত তথ্য জেনে রোগের উৎস সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেতে চাইছেন। তা সম্ভব না হলে আগামী দিনে এই রোগ মোকাবিলায় সঠিক দিশা পাওয়া মুশকিল হবে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, যে কোনও পতঙ্গবাহিত রোগ কোনও এলাকায় হঠাৎ করে হয় না। অন্য জায়গায় থাকার সময় কোনও ব্যক্তির শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে। জেলায় আসার পর রোগীর শরীরে উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায়। তখন বিষয়টি জানাজানি হয়। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার পাশাপাশি আক্রান্তদের সাম্প্রতিক ভ্রমণ-সম্পর্কিত তথ্য জানা জরুরি। জেলায় ফেরার পর আক্রান্তের শরীর থেকে অন্য কারও দেহে জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে কি না-তা জানতে ওই এলাকায় গণহারে রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ওন্দার ক্ষেত্রেও 

    আমরা এসব বিষয়ে কাজ শুরু 

    করেছি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)