• বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার ৬৪ শতাংশই ছাত্রী, এমএ, এমএসসি থেকে পিইচডি জয়জয়কার ‘কন্যাশ্রী’দের
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: উচ্চশিক্ষাতেও জয়জয়কার কন্যাশ্রীদের। এমএ, এমএসসি বা পিএইচডিতে এগিয়ে ছাত্রীরা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে ৬৪.৫৫ শতাংশ ছাত্রী। সম্প্রতি তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানিয়েছে। তার মধ্যে এসসি, এসটি, ওবিসি ও সংখ্যালঘু পড়ুয়ারাও রয়েছেন। পড়ুয়াদের মধ্যে ৬ শতাংশ সংখ্যালঘু। শেষ দু’বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকালটি সদস্যরা এক হাজার রিসার্চ পেপার প্রকাশ করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছাত্রীদের অবদান উল্লেখযোগ্য। কয়েকদিন আগে ৪১৩ জন পড়ুয়াকে ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রেও ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছেন।

    শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরাই বেশি সংখ্যায় পরীক্ষায় বসছে। মুর্শিদাবাদ, মালদহের মতো জেলাগুলিতেও ছাত্রীরা ছাত্রদের টক্কর দিচ্ছে। অনেকেরই ধারণা ছিল, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের পর মেয়েদের অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে সংসারের দিকে পা বাড়ান। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি প্রকাশ হওয়া তথ্য সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্যই এই সাফল্য এসেছে। এখন মেয়েদের পড়াশোনার জন্য অভিভাবকদের চিন্তা করতে হয় না। কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী বা সবুজ সাথীর মতো প্রকল্পগুলি ছাত্রীদের এগিয়ে দিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, মেয়েরা যাতে নিয়মিত ক্লাসে আসে তার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। হঠাৎ করে কোনও ছাত্রী স্কুলে আসা বন্ধ করলে তাঁরা বাড়িতে পৌঁছে যান। কেন তারা স্কুলে যাচ্ছে না, তার কারণ জানার পর ফেরেন। তাতে সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী। মেয়েরা যাতে কোনওভাবেই পিছিয়ে না যায়, তার জন্যই তিনি এই প্রকল্প চালু করেছেন। পড়াশোনার খরচ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সাইকেল দেওয়া হয়। স্কুলে আসতে তাদের কোনও সমস্যা হয় না। উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু রয়েছে। এই কার্ড থেকে লোন নিয়ে অনেকেই নার্সিং, ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্য কোর্সে ভর্তি হচ্ছেন।

    শিক্ষাদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলায় কন্যাশ্রী প্রকল্পে ২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ১৩৪ কোটি ৪৬ লক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। শুধু কে ওয়ান প্রকল্পে এই টাকা পাওয়া গিয়েছে। ১৬ লক্ষ ৮ হাজার ৬৪১ জনের অ্যাকাউন্টে এই টাকা গিয়েছে। কে টু প্রকল্পে ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৭৩ জন পড়ুয়া আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছে। তাদের অ্যাকাউন্টে ৬১৪ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ঢুকেছে। কয়েকদিন আগে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভিসি শঙ্করকুমার নাথ বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে চলেছে। এখানকার পড়ুয়ারা মুখ উজ্জ্বল করছে। এক আধিকারিক বলেন, কলেজগুলিতেও ছাত্রীরা ছাত্রদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)