• খুনের অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশে কবর থেকে তোলা হল গৃহবধূর দেহ
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রঘুনাথগঞ্জের তেঘড়িতে বধূর দেহ কবর থেকে তোলা হল। চারমাস আগে রঘুনাথগঞ্জের মহম্মদপুরে ফতেমা খাতুন(২০) নামে ওই বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। বধূকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির তিনজন গ্রেপ্তারও হয়। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অবশেষে আদালতের নির্দেশে কল্যাণী এইমসে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য দেহ তোলা হল।

    ফতেমার বাপেরবাড়ি তেঘড়িতে। প্রায় চারমাস আগে মহম্মদপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাপের বাড়ির তরফে অভিযোগ তোলা হয়, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফতেমাকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ফতেমার স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির তিনজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বধূর বাপের বাড়ির লোকজন সন্তুষ্ট হননি। তাঁরা ফের ময়নাতদন্তের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে এদিন দেহ কবর থেকে তোলা হয়। এবিষয়ে রঘুনাথগঞ্জ থানার এক আধিকারিক বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দেহ কবর থেকে তুলে কফিনবন্দি করে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশমতো কাজ হবে।

    এদিন সকাল ৮টা নাগাদ রঘুনাথগঞ্জের তেঘড়ি হাজিপাড়া গোরস্থানে পুলিস পৌঁছে যায়। সেখানে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত সেশন জাজ শ্রীনিবাস প্রসাদ শাহ, জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রবীর মণ্ডল সহ পুলিসের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আধিকারিকদের উপস্থিতিতেই কবর থেকে দেহ তোলা হয়। দেহটি এতদিনে পচে গিয়েছে। হাড়গোড় সহ অবশিষ্ট দেহাংশ তুলে সাদা প্লাস্টিকে মুড়িয়ে কফিনবন্দি করা হয়। তারপর প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে উপস্থিত আধিকারিকরা সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কফিনবন্দি দেহ নদীয়া জেলার কল্যাণী এইমসে পাঠানো হয়। সেখানেই দ্বিতীয়বার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। ওই বধূকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী ইজাজ আহমেদ, দেওর ও জাকে পুলিস আগেই গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁর শ্বশুর-শ্বাশুড়ি সহ অপর এক দেওর পলাতক। ফতেমার জা ও দেওর এখন জামিনে মুক্ত থাকলেও তাঁর স্বামী জেল হেফাজতে রয়েছে। এদিন বধূর স্বামীকে ঘটনাস্থলে আনা হয়। পুলিসি ঘেরাটোপে তাঁর সামনেই বধূর দেহ কবর থেকে তোলা হয়। ফতেমার মা এদিন কবরস্থানের কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকেই মেয়েটার উপর ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার করত। টাকাপয়সার জন্য চাপ দিত। ওরা আমার মেয়েকে খুন করেছে। আমার মেয়েকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে ওরা। আমি চাই, আদালত ওদের কঠোর শাস্তি দিক। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)