আজকাল ওয়েবডেস্ক: কসবা কান্ডের পর এবার হাওড়া সালকিয়ায়। হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার সালকিয়ার অরবিন্দ রোডের ইন্দিরা ভবনে রহস্য মৃত্যু হল অসীম দে নামে এক বৃদ্ধের। শনিবার তাঁর ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। এই ঘটনার তদন্তের নামে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। সিসিটিভিতে রহস্যজনক এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে ও বেরতে দেখা যায়। সেখানে দেখা যায় গত ২১ আগস্ট অজ্ঞাতপরিচয় ব্যেক্তি ফ্ল্যাটে ঢোকে। সেখানে প্রায় ২ ঘন্টা ছিল। ঢোকার সময় হাতে লাল ব্যানগ ছিল বেরবার সময় হাতে কালো ব্যা।গ। সেই ব্যাক্তি লিফট ব্যারবহার করে নি।
মৃতের পরিবারের লোকজনের দাবি এটি খুনের ঘটনা। তাঁরা আরও দাবি করেছেন, হাতের সোনার চারটি মূল্যবান আংটি ও মোবাইল ফোন খোয়া গিয়েছে। পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই আবাসনের তিনতলায় নিজের ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যেই রাতে একা থাকতেন । সেই ফ্ল্যাট থেকেই তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। বাড়ির লোকেরা তাঁর ফোন সুইচ অফ পেয়ে ওই বহুতলের অন্য এক বাসিন্দাকে খোঁজ নিতে বলেন।
সেই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা জানিয়েছেন, গত শনিবার অসীম বাবুর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায় দরজা ভেজানো রয়েছে। ঘরে তিনি পড়ে রয়েছেন।পরে জানা যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পরিবারের লোকজন ও গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।পরিবারের লোকজন মনে করছেন এটা খুনের ঘটনা। কারণ মূল্যবান সোনার চারটি আংটি ও মোবাইল পাওয়া যায়নি।
সিসিটিভিতে যে ব্যক্তিকে দেখা গেছে তিনিও অচেনা। তিনি ফ্ল্যাটের ভিতরে প্রায় দুঘন্টা ছিলেন। সঠিক তদন্তের দাবি করেছে পরিবার।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পাওয়া ব্যক্তির সন্ধান করা হচ্ছে।
এদিকে এই রহস্য-মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার সকালে তদন্তে আসে ফরেন্সিক দল। তাঁরা ফ্লাটের তালা খুলে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তবে বৃদ্ধের একমাত্র মেয়ে সুনীতি দত্ত জানায় তাঁর বাবাকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। ছিলেন। সঠিক তদন্তের দাবি করেছে পরিবার।
বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন মৃতের মেয়ে সুনীতি দত্ত। তিনি বলেন,”আমি এটাকে খুন বলে মনে করছি।“ কারণ হিসেবে তাঁর বক্তব্য যদি বাবার স্বাভাবিক মৃত্যু হত তাহলে বাবার হাতের ৪টে আংটি চেন খোয়া যেত না। তিনি বলেন, “আমার বাবা ধুমপান করতেন না। কিন্তু ঘরের মধ্যে সিগারেটের ছাই, দেশলাই বাক্স দেখতে পেয়েছি। সিসিটিভিতে যে ব্যাক্তিকে দেখা যাচ্ছে তাঁকে কখনও দেখি নি। সিসি ক্যামেরাতে সেই ব্যাক্তিকে দেখা যাচ্ছে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে ঘরে ছিল। মনে হচ্ছে এই ব্যাক্তিই কিছু করেছে। আমি চাইছি এই ঘটনায় যুক্ত যে বা যারা তাঁদের শাস্তি। সেই সঙ্গে কেন এমন ঘটনা ঘটানো হল তা দেখতে চাইছি। পুলিশ এই মামলার তদন্ত করছে।
প্রতিবেশী শিব কুমার শর্মা বলেন, “আমি বুঝতে পারিনি। শুধু দেখেছি অজ্ঞান অবস্থায় উনি পড়ে আছেন। ওনাকে দেখতে গিয়ে দেখি বাড়ির কোলাপসেবল গেটে, মেন গেটে তালা ছিল না। ঘরে বেল বাজানোর পরে কোন সাড়া না পেয়ে দরজায় আওয়াজ করতে গিয়ে গেট খুলে যায়। এরপর ঘরে ঢুকে ডাকার পর কোন সাড়া শব্দ পাইনি। ঘরের ভেতর শোবার ঘরে গিয়ে দেখি অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছেন উনি। পরে পুলিশ আসে। সিসি ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখা যায় সাড়ে ১০ টা নাগাদ একজন ওনার ফ্ল্যাট থকে বেরচ্ছে। যিনি এসেছেন তিনি অপরিচিত। এই ঘটনায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। শুনেছি অনার আংটি, মাদুলি, মোবাইল ফোন প্রভৃতি নিয়ে গিয়েছে।“
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পাওয়া ব্যক্তির সন্ধান করা হচ্ছে।