নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা
বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হলেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, আজ, সোমবার তাঁকে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এদিনই আদালতে পেশ করা হতে পারে তৃণমূল বিধায়ককে। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে এদিন সাতসকালেই হানা দেয় ইডি। এর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সিবিআই তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল। সেদিন দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালানোর পর তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মাস কয়েক আগে সুপ্রিম কোর্ট তৃণমূল বিধায়কের জামিন মঞ্জুর করেছে।আজ, সোমবার ভোরে ইডির আধিকারিকরা এসেছেন এই খবর পেতেই বাড়ির পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেন জীবনকৃষ্ণ। তখনই তাঁর পিছনে ধাওয়া করেন ইডির আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। বাড়ির পাশের মাঠ থেকে তৃণমূল বিধায়ককে কাদামাখা অবস্থায় পাকড়াও করা হয়। তাঁকে পাকড়াও করে নিয়ে আসে ইডির আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেই সময়ে বাড়ির পাশের পুকুরের দিকে নিজের মোবাইল ছুড়ে দেন তৃণমূল বিধায়ক। সেই পুকুর থেকে দুটি মোবাইল উদ্ধার করে আনেন ইডির আধিকারিকরা। ঠিক ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সিবিআই যখন নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় হানা দিয়েছিল। তখনও নিজের মোবাইল বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। এদিন ফের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। তারপরেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু তদন্তে কোনওরকম সহযোগিতা করছিলেন না তিনি। এমনটাই অভিযোগ ইডির। সেই কারণেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের জন্য বীরভূমের এক ব্যক্তি বিপুল পরিমাণে টাকা তুলেছিল। সেই সূত্র ধরেই এবার আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পৌঁছয় জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে। ওই ব্যক্তিও এদিন ছিলেন ইডির সঙ্গে। তবে শুধুই মুর্শিদাবাদের বড়ঞা নয়। তৃণমূল বিধায়কের রঘুনাথগঞ্জের শ্বশুরবাড়িতেও হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের পিয়ারাপুরে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার শ্বশুরবাড়িতেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দেয়।আজ, সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রথমে বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। তারপরেই তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা বাড়িতে প্রবেশ করেন। এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোলের সৃষ্টি হয়। বাড়িতে জীবনকৃষ্ণ সাহার শ্যালক নিতাই সাহা থাকেন। এর আগে নিতাই সাহার বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। সেই সময়ে অবৈধভাবে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিধায়কের শ্যালকের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি’র আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, মায়া সাহা তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের আত্মীয়। এমনকী রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়িতেও হানা দিয়েছে ইডি।