সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির অভিযানের (ED Raid) পর গ্রেপ্তার হয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha)। সোমবার তাঁর পিসি মায়া সাহার বাড়ি, বীরভূমের সাঁইথিয়াতেও তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। মায়া সাহা সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনিও যুক্ত, এই অভিযোগে ইডি তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। প্রথমে ভাষা নিয়ে গৃহকর্তা ও তদন্তকারীদের সমন্বয়ের সমস্যা হয়। তবে ঘণ্টা দুই ধরে গোটা বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে তেমন কিছুই পাননি তদন্তকারীরা। সম্পত্তির সমস্ত নথি নিয়ে তাই আগামী ২৮ আগস্ট ইডি দপ্তরে জমা দেওয়ার কথা বলেন আধিকারিকরা। এনিয়ে মায়াদেবীর স্বামী সুব্রত সাহা জানান, ”আমরা আপ্যায়ণ করে তাঁদের ঘরে বসিয়েছি। বলেছি যে যত সময় লাগে গোটা বাড়ি তল্লাশি করুন, কোনও অসুবিধা নেই। ওঁরা অবশ্য সন্দেহজনক কিছুই পাননি।”
ঘড়িতে সময় তখন সকাল সাড়ে ৭টা। সাঁইথিয়ায় মায়া সাহার বাড়ির সামনে তখন প্রচুর লোক জড়ো হয়েছেন। মায়াদেবীর স্বামী সুব্রতবাবু সিসিটিভি ফুটেজে তা দেখেই বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখন তাঁকে হিন্দিতে জানানো হয়, অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট রয়েছে, বাড়ি তল্লাশি করবেন তাঁরা। সুব্রতবাবু বলেন যে হিন্দি বুঝতে পারেন না, বাংলায় যেন বলা হয়। তাতে আধিকারিকরা জানান যে বাংলায় বলতে পারবেন না। এরপর অবশ্য সুব্রত সাহা আর জোরাজোরি করেননি। ইডি অফিসারদের বাড়িতে ডেকে আপ্যায়ণ করেন।
সুব্রতবাবুর কথায়, ”ওঁদের ঘরে ডেকে সোফায় বসাই। ওঁরা আমাকে, আমার স্ত্রী ও ছেলেকেও বসতে বলেন। আমাদের সমস্ত মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। এরপর নানা কথাবার্তা জিজ্ঞাসা করেন। গোটা বাড়ি তল্লাশি চালান। আমরাও বলি, যতক্ষণ লাগে বাড়ি ভালো করে দেখে নিন। তাঁরা সব দেখে খুব খুশি। কিছুই খুঁজে পাননি। তবে সবশেষে আমাদের সম্পত্তির নথি নিয়ে যেতে বলেছেন ওদের অফিসে। ২৮ তারিখ ডেকেছেন, যাব। কোনও অসুবিধা নেই।” এই তল্লাশির সঙ্গে জীবনকৃষ্ণ সাহার দুর্নীতি-যোগ নিয়ে অবশ্য সেভাবে কিছু বলতে নারাজ সুব্রতবাবু।
ইডি তল্লাশি নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বক্তব্য, ”আমি বুঝতেই পারছি না যে কেন আমার বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। তবে ওঁরা কিছুই খুঁজে পাননি। আমাদের সমস্ত নথিপত্র নিয়ে ২৮ তারিখ ওদের অফিসে যেতে বলেছেন।” জীবনকৃষ্ণর দুর্নীতির সঙ্গে এই তল্লাশির সম্পর্ক রয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি স্পষ্ট বললেন, ”ও আমার ভাইপো হয়। এমনি যেমন স্বাভাবিক সম্পর্ক, তেমনই। কেমন আছি, এসব টুকটাক খোঁজখবর নেওয়া চলে। এর বেশি কিছু নেই। ওর সঙ্গে আমার বাড়িতে ইডি আসার সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।” যদিও জীবনকৃষ্ণের বাবা অভিযোগ করেছেন, ছেলের দুর্নীতির সঙ্গে বোনেরও যোগাযোগ আছে। তাতে মায়াদেবী বলছেন, ”এটা একেবারেই বাজে কথা।”