প্রতিশোধ! মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিকের হাঁসুয়ার কোপে ডানহাতের পাঞ্জা খোয়ালেন শিক্ষক
বর্তমান | ২৬ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: জেল খাটানোর শাস্তি! মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিকের সশস্ত্র হামলায় হাতের পাঞ্জা খোয়ালেন এক প্রাথমিক শিক্ষক। সোমবার সকালে এমন মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর থানার দক্ষিণ কুলবেড়িয়া গ্রাম। গোকুলচন্দ্র মুড়া নামে ওই শিক্ষকের নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল পড়শি যুবক নন্দ মুড়ার। মেয়েটিকে ফুঁসলিয়ে এলাকাও ছেড়েছিল সে। পরে শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস নাবালিকাকে উদ্ধার করে হোমে পাঠায়। নন্দকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বেশ কয়েকমাস জেল খেটে সে বাড়ি ফিরে আসে। সম্প্রতি, হোম থেকে মেয়েকেও বাড়িতে এনেছিলেন গোকুলচন্দ্রবাবু। রেখেছিলেন গোপন আস্তানায়। কিন্তু যুবকটি ফের ছলে-বলে কৌশলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তা নিয়ে অতিষ্ঠ ছিলেন শিক্ষক। তিনি আবারও থানায় যেতে পারেন, এই খবর পেয়েই প্রেমিকার বাবাকে চরম শিক্ষা দিতে এদিন ধারালো হাঁসুয়া নিয়ে হামলা চালায় নন্দ। ডানহাতের পাঞ্জাটি কেটে পড়ে রাস্তায়। সেটিকে প্লাস্টিকে ভরে জখম শিক্ষককে প্রথমে ভগবানপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতায় রেফার করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকাছাড়া নন্দ। ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশা হক বলেন, অভিযুক্তের খোঁজে জোর তল্লাশি চলছে।
সূত্রের খবর, গোকুলচন্দ্রবাবু বাবু তালদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এদিন পৌনে এগারোটা নাগাদ বাড়ি থেকে সাইকেলে করে স্কুলে যাচ্ছিলেন। ফাঁকা রাস্তার ধারে হাঁসুয়া নিয়ে ওঁত পেতে ছিল নন্দ। গোকুলচন্দ্রবাবু কাছাকাছি হতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডানহাতের কব্জিতে সজোরো কোপ বসিয়ে চম্পট দেয় নন্দ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শিক্ষকের আর্তচিৎকার শুনে তাঁরা ছুটে আসেন। ছটফট করতে থাকেন তিনি। পাশেই পড়ে হাতের পাঞ্জাটি। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল রাস্তা। কোনওরকমে শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাঞ্জাটিকেও সঙ্গে নেওয়া হয়। কিন্তু, পাঞ্জাটি আদৌ জোড়া দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে চিকিৎসকদের একাংশ ধন্দে।
সূত্রের খবর, প্রায় চার বছর আগে শিক্ষকের নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে নন্দের। তাকে নিয়ে পালিয়েও যায়। গোকুলচন্দ্রবাবু থানায় এফআইআর করেন। বেশ কয়েকমাস বাদে পুলিস মেয়েটিকে উদ্ধার করে। ধরা পড়ে অভিযুক্ত যুবককও। প্রায় দেড় মাস সে সংশোধনাগারে ছিল। ওই নাবালিকাও প্রায় ১০ মাস একটি হোমে ছিল। বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হতেই মেয়েকে বাড়িতে এনে কার্যত লুকিয়ে রেখেছিলেন শিক্ষক। তা বলে এমন পরিণতি হবে, সেটা ভাবলেই শিউরে উঠছেন এলাকাবাসী।