• সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়াতেই ঈশিতাকে খুন! কে এই ‘প্রেমিক’ দেবরাজ?
    প্রতিদিন | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: কৃষ্ণনগরের বাড়িতে ঢুকে ছাত্রীকে গুলি করে ‘খুনে’র ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সেই ঘটনায় পলাতক অভিযুক্ত ‘প্রেমিক’ দেবরাজ সিং। কিন্তু কে এই দেবরাজ? পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দেবরাজ আদপে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরের বাসিন্দা। তার বাবা এনডিআরএফ কর্মী। সেই সূত্রেই উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে থাকা। দেবরাজ বাবা-মা, বোনের সঙ্গে বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরে বীজপুরের কাঁপা-চাকলা পঞ্চায়েতের ধরমপুর কলোনিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।

    বাবা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী হওয়ার সুবাদে দেবরাজ ভর্তি হয় কাঁচরাপাড়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। ওই একই স্কুলের পড়ুয়া হওয়ায় কৃষ্ণনগর মানিকপাড়ার বাসিন্দা ঈশিতা মল্লিকের সঙ্গে দেবরাজের বন্ধুত্ব হয়। পরে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় দু’জনে। গত বছর একসঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে তারা। বীজপুরের স্থানীয়রা আবার দেবরাজকে দেশরাজ নামেই জানেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই পরিবারের কেউ তেমনভাবে এলাকাবাসীর সঙ্গে মেলামেশা করে না। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর তরুণী কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু বিগত একবছর ধরে ম্যানেজমেন্ট পড়ার টালবাহানায় কার্যত কিছুই করছিল না দেবরাজ। এদিকে আগের মতো দু’জনের দেখা হওয়ার সুযোগ কমে গিয়েছিল বলে খবর।

    জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ঈশিতা এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে চেয়েছিল। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিবাদও চলছিল বলে অভিযোগ। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এরপরই সোমবার কৃষ্ণনগরে ঈশিতাদের বাড়িতে সটান হাজির হয় দেবরাজ। বাড়িতে ঢুকেই সরাসরি দোতলায় চলে যায় সে। দোতলার একটি ঘরেই ছিল ঈশিতা। ঘরে ঢুকেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ওই ছাত্রীকে গুলি করে ‘খুন’ করে দেবরাজ। তারপরেই পালিয়ে যায়। পুলিশ তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। কিন্তু কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র পেল সে? এত ক্ষোভ, হিংসা কীভাবে তৈরি হল মনে, যে ‘খুন’ করে ফেলা সম্ভব? সেসব প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই আবার এই ঘটনায় ভিনরাজ্যের যোগ রয়েছে বলে মনে করছেন। একাধিক উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশও।

    ঘটনার পর থেকেই বীজপুরের দেবরাজের বাড়ি বন্ধ। ফলে পরিবারের কারও খোঁজ মেলেনি। বিগত কয়েকদিন ধরেই দেবরাজের পরিবারের দেখা নেই বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তর শেষ কয়েক দিনের গতিবিধি জানতে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে জেঠিয়া থানার পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)