গোঘাটের কুমারগঞ্জ সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদের উপর একলক্ষ্মী সেতু পারাপারে অন্যায় ভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ উঠল বর্ধমানের উচালন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তার প্রতিবাদে সোমবার কুমারগঞ্জে সেতুর মুখের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গোঘাটের বাসিন্দারা। পুলিশ ও প্রশাসন গিয়ে বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিলে ঘণ্টা দেড়েক পর অবরোধ ওঠে। অবশ্য টোল আদায়ে কোনও অন্যায় হয়নি বলে দাবি উচালন পঞ্চায়েতের।
এ দিকে, অবরোধের জেরে দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলো জেলার বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন। কারণ, একই নদের উপর পূর্ত দফতর থেকে ‘বিপজ্জনক’ চিহ্নিত আরামবাগের রামকৃষ্ণ সেতু সংস্কারের কাজ চলায় সেটি দিয়ে মালবাহী গাড়ি ও বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ফলে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে এখন গোঘাটের কামারপুকুর চটি থেকে বেঙ্গাই-কুমারগঞ্জ রাস্তা ধরে বর্ধমানের একলক্ষ্মী সেতু পেরিয়ে প্রায় ৩৬ কিলেমিটার ঘুরপথই সম্বল। দূরপাল্লার বাসগুলি আরামবাগ সেতুর কাছে কাটা সার্ভিস করলেও সমস্ত পণ্যবাহী গাড়ির একলক্ষ্মী সেতু পারাপার ছাড়া বিকল্প নেই।
বিভিন্ন পণ্যবাহী যান চালকদের অভিযোগ, এমনিতেই ঘুরপথে যাওয়ায় হয়রানি হচ্ছে, গাড়ির তেল খরচ বেশি হচ্ছে। তার উপর টোলের নামে যথেচ্ছ তোলা আদায় করা হচ্ছে। টোল আদায়ের ১০০ টাকার বিল দিলেও মাল বেশি আছে দাবি করে দ্বিগুণ নেওয়া হচ্ছে।
সেতু পারাপারে টোল আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে উচালন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আনিসুর রহমান খানের দাবি, “সেতু পারাপারে কোনও টোল আদায় করা হচ্ছে না। সেতুর সংযোগকারী প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটির টোল নিচ্ছি আমরা। ওই অংশটি পঞ্চায়েতের। পূর্ত দফতর বা জেলা পরিষদ সংস্কার না করায় আমাদেরই সংস্কার করতে হয়।” বাম আমলে তৈরি সেতুটির সংযোগকারী রাস্তাটি সংস্কারে অতীতে টোল নেওয়া হত না। কিন্তু সংস্কারের জন্যে অনেক টাকা খরচ হওয়ায় ২০১৯ সাল নাগাদ পঞ্চায়েতের সাধারণ সভা ডেকে এই টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত হয় বলে তিনি জানান।
সমস্ত বিষয়টি নিয়ে রায়না ২ ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “টোল আদায় সংক্রান্ত সমস্যার খবর পেলেও নির্দিষ্ট অভিযোগ মেলেনি। রাস্তাটির মালিকানা জানতে ব্লক ভূমি দফতর এবং পূর্ত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’