প্রয়াত অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অভিনেতা। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাঁকে গত ১৫ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসায় সাড়া মেলেনি। ১৭ আগস্ট থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিলেন। ৬২ বছর বয়সে জীবনের ইনিংস শেষ হল অভিনেতার। দীর্ঘদিনের সতীর্থ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এক শোকবার্তায় লিখেছেন, ‘বন্ধু, সহকর্মী, প্রিয় মানুষ জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে গভীর ভাবে শোকাহত। ওর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।’
১৯৬৩ তে জয়ের জন্ম। বাংলা ছবিতে অভিনয় শুরু করেন ১৯৮২ সালে। রাজনীতিবিদ তথা অভিনেত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় জয়ের। সেই দাম্পত্যে ভাঙন ধরলেও তাঁদের দেখা হলে কথা হতো বলে জানান অনন্যা। এদিন তিনি বলেন, ‘জয় ছিল আমার প্রথম প্রেম। আমার জীবনের প্রথম পুরুষ। ১৫ আগস্ট থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আমি নিয়মিত খোঁজ নিতাম। ওর বাড়ির লোকেদের যা প্রয়োজন, তাতে পাশে থেকেছি। শেষবারের মতো আজ ওর সঙ্গে থাকব।’
এক সময় টলিউডে চুটিয়ে অভিনয় করেছিলেন জয়। চুমকি চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর জুটি আট-নয়ের দশকে একের পর এক হিট বাংলা ছবি উপহার দিয়েছিল। ‘হীরক জয়ন্তী’, ‘অভাগিনী’, ‘মিলন তিথি’, ‘নাগমতি’, ‘চপার’ সহ মূল ধারার বহু বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। অভিনয় থেকে বিরতির পর রাজনীতির ময়দানেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে হেরে যান এক সময়ের সহঅভিনেত্রী শতাব্দী রায়ের কাছে। জয়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না শতাব্দী। তিনি বলেন, ‘জয়ের চিকিৎসার ব্যাপারে ওর বোনের সঙ্গে আমি যোগাযোগ রাখতাম। রবিবারও ওর চিকিৎসকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। হঠাৎ জয়ের চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার অভিনয় জীবনের প্রথমদিকে জয়ের সঙ্গে অভিনয় করেছিলাম। জয়ের রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হতেই পারে। রাজনীতির লড়াইয়ের আগে সে আমার বন্ধু, সহকর্মী। আমার মনে হয় জয় নিজেকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারত। ওর মধ্যে সেই গুণ ছিল। কিন্তু ভুল পথে চালিত হওয়ায় অকালেই শেষ হয়ে গেল।’ ২০২১ নাগাদ আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন জয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ টলিউড।