নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃষ্টির কারণে আগুনছোঁয়া দাম সব্জির। পটল, ঢেঁড়শ, ঝিঙে, বরবটি ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় আনাজ কার্যত ছোঁয়া যাচ্ছে না বলে মানুষের অভিযোগ। অধিকাংশ সব্জি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছে বা হাঁকানোর পথে। সবমিলিয়ে মধ্য-নিম্নবিত্তের মাথায় হাত। পরিবারের পাতে সামান্য তরকারি-ভাত তুলে দিতে গিয়ে নাজেহাল বেশিরভাগ মানুষ। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে পুজোর আগে কার্যত নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা।
কলকাতা ও শহরতলির খুচরো বাজারে পটল, ঢেঁড়শ, ঝিঙে, বরবটির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। উচ্ছে, বেগুন, লঙ্কা ১০০ টাকা। তুলনায় কম দাম ভিন রাজ্য থেকে আসা ‘অসময়ের’ ফুলকপি, বাঁধাকপির। খুচরো বাজারে ফুলকপি ৬০ ও এক কেজি বাঁধাকপি ৪০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। রাজ্য সরকারের খাদ্য সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানিয়েছেন, ফুলকপি, বাঁধাকপি উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক থেকে আসছে। বর্ষাকালে ওই জায়গাগুলিতে কপির চাষ হয়। কলকাতার পাইকারি বাজারে বড় আকারের ফুলকপির দাম ৪০ টাকার আশপাশে। ছোট হলে দাম ৩০ টাকা। বাঁধাকপি পাইকারি বাজারে ১৮ থেকে ২০ টাকা দাম। ছত্তিশগড়ের রায়পুরের দিক থেকে বেগুন আসছে। রাজ্যে উৎপাদিত বেগুনের থেকে তার দাম সস্তা। রায়পুরের বেগুনের দাম পাইকারি বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। স্থানীয় জমিতে উৎপাদিত বেগুনের দাম ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
সব্জি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, টানা বৃষ্টিতে সব্জি চাষের জমিতে জল জমেছে। ফলে পটল, ঢেঁড়শ, ঝিঙে, বরবটি, লঙ্কা ইত্যাদি গাছ নষ্ট হতে বসেছে। যার জন্য কমেছে ফলন। সরবরাহ অপর্যাপ্ত। তাই বাড়ছে দাম। শুধু কুমড়ো, পেঁপে প্রভৃতির দাম একটু কমের দিকে। রাজ্য সরকারের সুফল বাংলার স্টলে কিছুটা হলেও কম দামে সব্জি কেনার সুযোগ রয়েছে। টাস্ক ফোর্সের সদস্যই জানিয়েছেন, এখন অধিকাংশ সব্জির পাইকারি বাজারে দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে বৃষ্টি চলছে তাতে নতুন করে মরশুমি সব্জি চাষের সুযোগ বিশেষ নেই। তবে এই বৃষ্টির একটি সুবিধাও আছে। এর ফলে শীতের সব্জির চাষ ভালো হবে। বাজারে শীতের সব্জি এবার তাড়াতাড়ি এসে যেতে পারে বলেও অনুমান। সাধারণত অক্টোবর থেকে শীতের সব্জির চাষ শুরু হয়। এ বছর বৃষ্টি কমে গেলে আগেভাগে চাষ শুরু হতে পারে। মাঠে এবং ভূগর্ভস্থ জল পর্যাপ্ত থাকবে। সে কারণে শীতের সব্জির সেচের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।