• চুরির পর পাপমুক্ত হতে কেদারনাথ দর্শন, তল্লাশি চালাতেই নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার একের পর এক টোটো...
    আজকাল | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরিবার নিয়ে কেদারনাথ দর্শন যাত্রার আগেই ধরা পড়ল এক টোটো চোর। তার আর কেদারনাথ দর্শন করা হল না। অভিযুক্ত চন্দন সরকারের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানে। হাওড়া স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুর থানার পুলিশের বিশেষ বাহিনী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাহিনীর সদস্যরা কেউ সেজেছিলেন চা বিক্রেতা, কেউ ট্রেনের যাত্রী আবার কেউ ফেরিওয়ালা। চন্দনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পাওয়া যায় এই টোটোর যে 'রিসিভার' বা যার জিম্মায় এই‌ ‌চোরাই টোটো রাখা হত সেই ব্যক্তির সন্ধান। নদীয়ার দয়াতপুরের বাসিন্দা ওই রিসিভার রামপদ মণ্ডল স্থানীয় বিজেপির এক নেতা বলে জানা গিয়েছে। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ সাতটি চুরি যাওয়া টোটো উদ্ধার করেছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও দয়াতপুরের বিজেপি নেতা জুয়েল মল্লিক দাবি করেছেন অভিযুক্ত রামপদ মণ্ডলের সঙ্গে তাঁদের দলের বহুদিন কোনো সম্পর্ক নেই।

    প্রসঙ্গত, বারুইপুর থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকদিন ধরে লাগাতার টোটো চুরি যাচ্ছিল। গত ১৫ আগস্ট বারুইপুর কাছারি বাজারের সামনে থেকে চুরি যায় টোটো। টোটোর মালিক অজিত বিশ্বাস বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরেই বারুইপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সৌম্যজিত রায়ের নির্দেশে থানার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল এই ঘটনার তদন্তে নামে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ।‌ সোর্স মারফত পুলিশ খবর পায় চক্রের মূল পাণ্ডা চন্দনের। চন্দনের হদিশ পেতে খোঁজ নেওয়া শুরু করে পুলিশ। 

    এরপর সোর্স মারফত পুলিশ জানতে পারে পরিবার নিয়ে কেদারনাথ দর্শনে যাচ্ছে চন্দন। সেইমতো পরিবার নিয়ে হাওড়া স্টেশনে হাজির হয় চন্দন। পুলিশের ওই বিশেষ দলের কাছে খবর আসে চন্দন কুম্ভ এক্সপ্রেস ধরতে চলেছে।‌ ফলে ট্রেন স্টেশনে ঢোকার বেশ কিছুক্ষণ আগেই পুলিশ পৌঁছে যায় স্টেশনে।‌ ছদ্মবেশে ছড়িয়ে পড়ে এদিক ওদিক। দুপুর ১টা নাগাদ চন্দন প্ল্যাটফর্মে ঢুকলেই তাকে ধরে ফেলে পুলিশের ওই বিশেষ দলটি। জেরায় পুলিশ জানতে পারে টোটো চুরির জন্য চন্দন নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াত। তার সঙ্গে থাকত ব্যাটারি চার্জার। নদীয়া থেকে যাকে ধরা হয়েছে সেই রিসিভার রামপদ মণ্ডলের সঙ্গে তার জেলে থাকার সময় আলাপ হয়েছিল। চন্দন টোটো চুরির পর পৌঁছে দিত রামপদর কাছে। রামপদ চুরির এই টোটো বিক্রি করত কখনও ২৫ হাজার আবার কখনও ১ লক্ষ টাকা দামে। উল্লেখ্য, গত এক মাসে ১২টি টোটো বারুইপুর থানা এলাকা থেকে চুরি যায়। তবে পুলিশ এবিষয়েও নিশ্চিত যে বারুইপুর এলাকায় কেউ না কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আছে।‌ পুলিশের একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় কেউ না থাকলে বর্ধমান থেকে এসে দিনের পর দিন এভাবে চুরি করা যায় না। এই তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

    (বাঁ দিকে, রামপদ মণ্ডল এবং ডান দিকে, চন্দন সরকার। নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (আজকাল)