ফের পিছোল ডিএ মামলার শুনানি, হতাশ বাংলার সরকারি কর্মীরা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ আগস্ট ২০২৫
ফের পিছিয়ে গেল মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত মামলার শুনানি। রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারাধীন অন্য একটি মামলায় ব্যস্ত থাকায় সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি মুলতুবি রাখার আবেদন জানানো হয়। রাজ্যের অন্যতম আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতকে জানিয়েছেন, মামলাটি যেন ১০ সেপ্টেম্বরের পর শোনা হয়। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে শীর্ষ আদালত। তবে আগামী শুনানির নির্দিষ্ট দিন এখনও ঘোষণা করেনি সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, এর আগে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে ছয় সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রাজ্য তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। বরং শীর্ষ আদালতের কাছে আরও ছ’মাস সময় চেয়ে আবেদন করে রাজ্য।
গত ৪ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত একটানা কয়েকদিন ডিএ মামলার শুনানি চলে বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চে। এর পর ১২ আগস্টও শুনানি পিছিয়ে যায়। সেদিনও রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল এসআইআর সংক্রান্ত মামলায় ব্যস্ত ছিলেন বলে জানা যায়।
ডিএ মামলার সূত্রপাত হয়েছিল কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (এসএটি) ও কলকাতা হাইকোর্টের রায় ছিল সরকারি কর্মীদের পক্ষে। ২০২২ সালে হাইকোর্ট রায় দেয়, ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার এবং কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তা দেওয়া উচিত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়।
রাজ্য সরকারের যুক্তি, ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, এটি মৌলিক অধিকারও নয়। উপরন্তু, কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক কাঠামো ভিন্ন হওয়ায় কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্যের দাবি, অর্থাভাব রয়েছে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। তাই অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানিয়েছে রাজ্য।
অন্যদিকে, মামলাকারী পক্ষের দাবি, ডিএ নির্দিষ্ট সময়মতো দেওয়া সরকারের নীতিগত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। খেয়ালখুশি মতো তা দেওয়া যায় না। প্রয়োজনে কিস্তিতে হলেও বকেয়া ডিএ মেটানো হোক। এই প্রেক্ষাপটে আগস্ট মাসে পরপর দু’বার পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি। এখন সমস্ত নজর আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের পর শীর্ষ আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।