সঞ্জয় রাজবংশী: ঘুমন্ত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে খুন! এমনই হাড়হিম ঘটনা ঘটলো কালনার মন্তেশ্বর আকবর নগর এলাকায়।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে গোলাম মোস্তফা মন্ডল তার বাড়ির মধ্যে শুয়ে ঘুমোচ্ছিল। ঘুমন্ত অবস্থায় ছেলে জাহিদুল মন্ডল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন বাবাকে। ঘুমন্ত অবস্থায় অতর্কিত এই হামলায় গোলাম মোস্তফা মণ্ডল ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন এবং তার মৃত্যু হয়।
প্রতিবেশীরা চিৎকারের শব্দ শুনে ছুটে আসে এবং ঘটনাস্থলে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় গোলাম মোস্তফা মণ্ডলকে দেখতে পান। তারা দ্রুত পুলিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে মন্তেশ্বর থানার পুলিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে মন্তেশ্বর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পুলিস মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
এরপরই মন্তেশ্বর থানার পুলিস মৃতদেহ থানায় নিয়ে আসেন। কী কারণে খুন- তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
সূত্র মারফত্ জানা গিয়েছে, ধৃত জাহিদুল মন্ডলকে গ্রেফতার করেছে মন্তেশ্বর থানার পুলিস। আগামীকাল মৃতদেহ ময়না তদন্ত করার জন্য কানলা মরগে পাঠানো হবে।
ঘটনার পর পুলিস দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং অভিযুক্ত জাহিদুল মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদুল মণ্ডল কেন এই কাজ করেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক বিবাদ, সম্পত্তি সংক্রান্ত ঝামেলা, নাকি অন্য কোনো কারণ এর পেছনে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশেপাশের লোকজনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং অভিযুক্তকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এক পুলিস কর্তা বলেন, "আমরা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আমরা আরও নিশ্চিত হতে পারব।"
আজ সকালে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মর্গে পাঠানো হবে। পুলিসের আশা, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং অভিযুক্তের জবানবন্দি থেকে খুনের পেছনের আসল উদ্দেশ্য পরিষ্কার হবে। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিস অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করছে, যাতে কোনো দিকই বাদ না পড়ে।
এই ঘটনা কেবল একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং পারিবারিক সম্পর্কের চরম অবক্ষয়ের এক করুণ চিত্র। কীভাবে এক ছেলে তার জন্মদাতা পিতাকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করতে পারলো, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে। এই ধরনের ঘটনা সমাজে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ইঙ্গিত দেয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজকর্মীরাও এই ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার ওপর জোর দিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।