বিধান সরকার: তেলের ট্যাঙ্কের উপর বসে ছেলে বলল পায়ে গরম লাগছে,ছেলেকে নামাতেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে গেল বাইকটি (Bike Burnt)। ভয়ংকর! গতকালই বাবা মারা গিয়েছেন। আর আজই এই দুর্বিপাক! ঘটনাস্থল হুগলির চণ্ডীতলা (Hooghly Chanditala)।
অশুভ সময়?
বিপদের পর বিপদ। গতকালই বাবা মারা গেছেন আনন্দ গরামির। আর আজই এই দুর্ঘটনা! আনন্দ বেরিয়েছিলেন একটা দরকারি কাজে। বাইকে নিয়েই বেরোলেন। চণ্ডীতলার পেট্রোল পাম্প থেকে পেট্রোল ভরে বেরোনোর সময়েই এই বিপত্তি। গাড়িতে তেল ভরে পেট্রোল পাম্পের গেটের সামনে যেতেই দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো আগুন। বাইকটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ছেলে বলল
আনন্দ জানান, ছেলেকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। বাইকের তেলের ট্যাংকের উপরে বসেছিল ছেলে। পেট্রোল পাম্প থেকে তেল ভরে বেরোনোর সময় ছেলে বলে, তার পায়ে খুব গরম লাগছে। দেখি, গাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নীচে নামি, ছেলেকে নামাই। নামাতে-না-নামাতেই দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করল বাইকটি। নিমেষের মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেল পালসার বাইক। পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা আগুন নেভানোর যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে তার আগেই অবশ্য বাইকটি পুড়ে যায়।
দাসপুর থানার কলমিজোড়
ওদিকে ভিন্ন একটি পথদুর্ঘটনা ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার কলমিজোড় ধানখাল গ্রামীণ সড়কের কলমিজোড় মান্নাপাড়ায়। জানা যাচ্ছে, স্কুলের পথে যাচ্ছিল দাসপুরের চককৃষবাটি গ্রামের ছেলে রূপম মূলা। রূপম বাড়ি থেকে তার স্কুল ব্রাহ্মণবসান হাইস্কুলে যাচ্ছিল নিজের সাইকেলে চড়ে। যাওয়ার পথে ওই রাস্তায় কলমিজোড় মান্নাপাড়ায় এক স্টোনচিপস বোঝাই ট্রাক ধাক্কা দেয় তাকে।
লরির নীচে পড়ুয়া
সাইকেল নিয়ে রূপম ওই গাড়ির তলায় ঢুকে যায়। কোনও ক্রমে তিন বন্ধু মিলে রূপমকে গাড়ির তলা থেকে বার করে আনে। সাইকেল গাড়ির তলায়। ওদিকে বেগতিক দেখে পালায় গাড়ির চালক ও খালাসি। প্রাণে বাঁচে ছেলেটি। ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামের মানুষ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এভাবে নিয়মিত তাদের গ্রামীণ রাস্তায় বড় বড় মালবোঝাই গাড়ি ঢোকে এবং আতঙ্কে থাকতে হয় তাঁদের। রূপমের তিন বন্ধু তাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করে। ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে স্থানীয় বাসিন্দারা, গ্রামের মহিলারা লাঠি, চেলা কাঠ নিয়ে চড়াও ঘাতক গাড়ির উপর। ভাঙচুর করা হয় গাড়িটি।
ঘটনাস্থলে পুলিস
উত্তেজনার খবর পেয়ে দাসপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গ্রামীণ সরু রাস্তায় মালবাহী ভারী যানবাহন চলাচলে একাধিক বার স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়েছেন। ভারী যানবাহন গ্রামীণ রাস্তায় ঢুকে রাস্তার ক্ষতি করছে। ক্ষোভ পড়ছে প্রশাসনের উপর। এ নিয়ে প্রশাসনকে কড়া হাতে বিষয়টি দেখার নির্দেশও দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার পরেও গ্রামীণ রাস্তায় অবাধে মালবাহী ট্রাক চলাচলে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর। কেন ক্ষোভ, তার জ্বলন্ত উদাহরণ দাসপুরের এই ঘটনা।