• অপর্ণা সেনের মন জিতবেন বলেই বাংলা শিখেছিলেন কমল হাসন! এত বছর পর এই প্রথম কে ফাঁস করলেন এই তথ্য
    আজকাল | ২৬ আগস্ট ২০২৫
  • অভিনেত্রী ও গায়িকা শ্রুতি হাসান বহু ভাষায় দক্ষতার জন্যই পরিচিত। দক্ষিণ ভারত থেকে বলিউড—দেশের নানা প্রান্তের ছবিতে তাঁর অবাধ যাতায়াত। এই ভাষাপ্রীতি আসলে বাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া—বলিউড-টলিউড-দক্ষিণ, সর্বত্র সমান পারদর্শী কিংবদন্তি অভিনেতা কমল হাসনের কাছ থেকে। সম্প্রতি, এমনটাই জানিয়েছেন শ্রুতি নিজেই।

    সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের ‘কুলি’ ছবির সহ-অভিনেতা সত্যরাজের সঙ্গে আলাপচারিতায় শ্রুতি খোলসা করলেন বাবাকে ঘিরে এক অজানা কাহিনি। সেই সাক্ষাৎকারে সত্যরাজ শ্রুতির বহুভাষাজ্ঞানের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, ‘‘তোমার বাবাও তো বাংলায় ছবি করেছিলেন, সেই জন্যই ভাষাটা শিখেছিলেন।’’ তখনই শ্রুতি হেসে সংশোধন করেন, ‘‘না না, সিনেমার জন্য নয়। বাবা শিখেছিলেন বাংলাটা একেবারে অন্য কারণে—অপর্ণা সেনের জন্য!’’

    অপর্ণা সেনের প্রতিভা ও ব্যক্তিত্বে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন কমল হাসন যে, কোনও চরিত্রের প্রয়োজন ছাড়াই তিনি নিজে থেকে বাংলা শিখে ফেলেন—এমন তথ্য ভাগ করে শ্রুতি যেন ভক্তদের আরও একবার চমকে দিলেন। এর আগেও বাবাকে ঘিরে নিজের অভিজ্ঞতা খোলাখুলি জানিয়েছিলেন শ্রুতি। জনপ্রিয় ইউটিউবার মদন গোবির সঙ্গে এক আড্ডায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই সবাই আমাকে বলত—‘ওই দ্যাখো, কমল হাসনের মেয়ে’। অথচ আমি তখন নিজের পরিচয়টা খুঁজছিলাম। এতটাই চাপ বোধ করতাম যে, কেউ জিজ্ঞেস করলে আমি বলতাম—না, আমার বাবা ডা. রামচন্দ্রন, যিনি আমাদের ডেন্টিস্ট। আর আমার নাম? পূজা রামচন্দ্রন!’’

    তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই চাপ কমেছে। আজ তিনি গর্বের সঙ্গেই বলেন, ‘‘বাবার খ্যাতি থেকে আলাদা হওয়া যে কত কঠিন সেটা আমি বুঝেছি। সর্বত্র যখন বাবার পোস্টার, ব্যানার—তখন আলাদা হয়ে ওঠা অসম্ভব। আজ আমি কল্পনাও করতে চাই না, শ্রুতি হাসন হবেন অথচ তাঁর পাশে থাকবে না কমল হাসনের ছায়া—এটা অসম্ভব।’’

    বাবার খ্যাতি, নিজের লড়াই, আর এক কিংবদন্তি অভিনেত্রীর প্রতি কমল হাসনের নিঃশর্ত শ্রদ্ধা—শ্রুতির মুখে শোনা এই কাহিনি যেন আরও একবার প্রমাণ করল, কমল হাসন শুধু অভিনেতা নন, তিনি আসলেই এক অদম্য শিল্পপ্রেমী।

    অন্যদিকে, ফের জোরদার বিতর্কে জড়িয়েছেন কমল হাসন।সনাতন ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে তীব্র বিতর্কের মুখে এই অভিনেতা-রাজনীতিবিদ। পদ্মশিবির থেকে বয়কটের ডাক তো বটেই, এবার তাঁর জীবনের দিকেও ছায়া ফেলল প্রাণনাশের হুমকির কালো মেঘ। তামিল ছোটপর্দার অভিনেতা রবিচন্দ্রন খোলাখুলিভাবেই জানিয়েছেন, সনাতনবিরোধী মন্তব্যের জন্য তিনি হাসনকে খুন করে ফেলবেন।

    ঘটনার সূত্রপাত সূরিয়ার এনজিও ‘আগরম ফাউন্ডেশন’-এর ১৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে। সেখানে হাসন কেন্দ্র সরকারের ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET)-এর কড়া সমালোচনা করে বলেন, এই পরীক্ষা অসংখ্য এমবিবিএস প্রার্থীর স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে এবং এটি “সনাতন ধর্মেরই এক ক্ষতিকর ফলাফল”। তাঁর এই মন্তব্যের পর থেকেই শুরু হয় প্রবল প্রতিক্রিয়া, বয়কটের ডাক এবং অবশেষে খুনের হুমকি।

    একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে রবিচন্দ্রন শুধু হাসনকে ‘সরলমনা রাজনীতিক’ বলেই থামেননি, প্রকাশ্যে বলেন— “আমি ওর গলা কেটে দেব”। এই চরম হুমকি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে অভিনেতার অনুরাগীদের মধ্যে।

    রাজ্যসভার সাংসদ ও ‘মাক্কাল নিধি মাইয়াম’-এর প্রতিষ্ঠাতা হাসন সেই অনুষ্ঠানে কমল হাসন বলেন,“এই যুদ্ধে কেবল শিক্ষা-ই দেশকে বদলে দিতে পারে। একে একমাত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করুন—যা স্বৈরতন্ত্র ও সনাতনের শৃঙ্খল ভাঙতে সক্ষম। অন্য কোনও অস্ত্র হাতে তুলবেন না। তাতে আপনি জিতবেন না, সংখ্যাগুরু তন্ত্রে পরাস্ত হবেন! অজ্ঞ সংখ্যাগুরু আপনাকে হারিয়ে দেবে।”

    বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরপরই শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক চাপ আসা। তামিলনাড়ুর বিজেপি ইউনিট হাসানের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর তাঁর অভিনীত ছবিগুলি বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে। বিজেপি রাজ্য সম্পাদক অমর প্রসাদ রেড্ডি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও বার্তা দিয়ে বলেন,“আগে ছিলেন উদয়নিধি স্ট্যালিন, আর এখন কমল হাসন—যারা সনাতন ধর্ম ধ্বংস করতে চায়। এবার সময় এসেছে শিক্ষা দেওয়ার।”

    তিনি হিন্দুদের অনুরোধ করেছেন হাসনের সিনেমা দেখা বন্ধ করতে, এমনকি ওটিটিতেও নয়। তাঁর মতে, “এভাবে চাপ সৃষ্টি করলে এরা আর কোটি কোটি হিন্দুর ভাবাবেগে আঘাত করে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করবে না।”

    বিজেপি-র প্রবীণ নেতা তামিলিসাই সৌন্দররাজনও হাসানকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, তিনি হিন্দু বিশ্বাসকে অপমান করেছেন এবং তাঁর মন্তব্য নিন্দনীয়।
  • Link to this news (আজকাল)