বহুতল নির্মাণ ইস্যুতে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিং সরগরম, মেয়রের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তৃণমূল কাউন্সিলার রঞ্জনের
বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: জমি ও বহুতল নির্মাণ ইস্যুতে সরগরম শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিং। মঙ্গলবার জংশনে বহুতল নির্মাণ ঘিরে মেয়র গৌতম দেবের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার রঞ্জন শীলশর্মা। তাঁর অভিযোগ, গরিব মানুষের বাড়ি ভাঙলেও বড় লোকদের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আদালত দেখাচ্ছেন মেয়র। একইসঙ্গে পুরসভার জমি দখল নিয়ে গলা ফাটায় সিপিএম ও বিজেপি। এনিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। এদিকে, এদিনও বোর্ড মিটিংয়ে গরহাজির ছিলেন তৃণমূলের ‘বিদ্রোহী’ মেয়র পারিষদ দিলীপ বর্মন। তাঁর সাফ জবাব, যেখানে সম্মান নেই, সেখানে যাব না। তাই বোর্ড মিটিং বয়কট করেছি।
এদিন পুরভবনে ৪৩তম বোর্ড মিটিং হয়। শহরের জংশনে বহুতল নির্মাণ নিয়ে সভায় সুর চড়ান তৃণমূল কাউন্সিলার রঞ্জন। তিনি বলেন, সংকীর্ণ গলির ভিতর বহুতল নির্মাণ করা হচ্ছে। হিলকার্ট রোড দেখিয়ে সেই ভবন নির্মাণের অনুমোদন বের করা হয়েছে। কিন্তু সেই গলির রাস্তার কথা উল্লেখ করা হয়নি। তা সত্ত্বেও নির্মাণ নিয়ে নির্বিকার পুরসভা। তাঁর অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণ রোখার ব্যাপারে মেয়র যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রক্ষা করতে পারছেন না। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে গরিব মানুষের বাড়ি ভাঙলেও বড় লোক, ব্যবসায়ী, প্রমোরদের ক্ষেত্রে কিছু করতে পারছেন না। আদালত দেখাচ্ছেন মেয়র।
সভায় জবাবে মেয়র বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার পরই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর আগে কিছু করা সম্ভব নয়। সঙ্গে সঙ্গে রঞ্জন ওই ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার দাবি করেন। তাতেও মেয়র রাজি হননি। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক বাঁধতেই পুর চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী সংশ্লিষ্ট ইস্যু প্রত্যাহার করে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এরপরই পুরসভার জমি দখলের অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপি’র অমিত জৈন বলেন, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার জমি দখল হয়ে গিয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব। একই অভিযোগ করেন সিপিএম কাউন্সিলার মুন্সি নুরুল ইসলাম। দু’জনের বক্তব্য, পুরসভার জমি দখল হয়ে যাবে, তা মানা যায় না।
পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ১.৪৩ একর জমি পুরসভার নামে রয়েছে। অভিযোগ, পুরসভার সাইনবোর্ড থাকলেও একটি চক্র জমির একাংশর রেকর্ড পরিবর্তন করে দখলে নেওয়ার ছক কষছে। মেয়র বলেন, ইতিমধ্যে বিষয়টি তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই জমি দখল হতে দেব না। তা উদ্ধার করবই। এর আগে পুরসভার বেশকিছু জমি উদ্ধার করেছি।
এদিকে, মেয়র পারিষদ দিলীপ এদিনও সভায় হাজির ছিলেন না। অবশ্য এ বিষয়ে শাসক দলের কেউ কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তৃণমূলের একাংশর দাবি, দিলীপকে সরিয়ে তাঁর হাতে থাকা ক্রীড়া, ট্রেড লাইসেন্স ও আবাসন বিভাগের দায়িত্ব অন্য কাউকে দেওয়া উচিত।