আধ কেজির বেশি সোনা, সাড়ে ৪ লক্ষ নগদ সহ ধৃত, তেলেঙ্গানায় ডাকাতিতে অভিযুক্ত রতুয়ার শ্রমিক
বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ ও চাঁচল: তেলেঙ্গানার সুরিয়াপেট জেলার একটি গয়নার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ওই রাজ্যের পুলিস গ্রেপ্তার করল রতুয়ার এক পরিযায়ী শ্রমিককে। সোমবার মধ্যরাতে রতুয়া থানার পুলিসের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জসিমুদ্দিনকে। তার বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় ৫৫০ গ্রাম সোনা এবং নগদ ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। জসিমুদ্দিনকে ধরতে চারদিন ধরে মালদহে এসে ঘাঁটি গেড়েছিল তেলেঙ্গানা পুলিস। শেষ পর্যন্ত তাদের জালে বমাল ধরা পড়ে ওই যুবক। পাড়ার ছেলের ঘরে এত সোনা, টাকা দেখে হাঁ হয়ে যান স্থানীয়রাও। পরিযায়ী শ্রমিক জসিমুদ্দিনের বিরুদ্ধে আগেও চুরির অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। দশদিনের রিমান্ডের আবেদন করে ধৃতকে মঙ্গলবার চাঁচল মহকুমা আদালতে তুলেছিল পুলিস। আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে জসিমুদ্দিনকে নিয়ে তেলেঙ্গানা রওনা হয়েছে ওই রাজ্যের পুলিস টিম।
মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, রতুয়া থানার চাঁদমনি - ২ পঞ্চায়েতের বাটনা এলাকার আন্ধারু গ্রামের বাসিন্দা জসিমুদ্দিন। তার বিরুদ্ধে তেলেঙ্গানার সুরিয়াপেট জেলার একটি সোনার গয়নার দোকানে ডাকাতি করার অভিযোগ রয়েছে। ওই রাজ্যের পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
ওই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে অভিযান চালানোর পর বিপুল সোনা দেখে চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা হয়েছিল পুলিসের দলটির। ওই দলের এক সদস্য জানান, ধৃতের বাড়িতে আলমারির লকার খুলতেই চোখ ধাঁধিয়ে যায় পুলিসের। পাওয়া গিয়েছে থরে থরে সাজানো পাঁচশো টাকার বান্ডিল। এক কোণে রাখা নতুন মোবাইলের বাক্স খুলতেই ঝলমল করে ওঠে প্রচুর সোনার গয়না।
পুলিস সূত্রে খবর, ২১ জুলাই তেলেঙ্গানার সুরিয়াপেট এলাকায় সোনার গয়নার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির পর মালিক প্রচুর পরিমাণে সোনার গয়না ও নগদ। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই রাজ্যের পুলিস প্রথমে স্থানীয় এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জেরা করে সুরিয়াপেট পুলিস জসিমুদ্দিনের নাম জানতে পারে। তারপরই তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চালানো হয়।
পুলিস জানিয়েছে ধৃতের বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চলে। শেষপর্যন্ত আলমারি খুলতেই মেলে লুটের সোনা ও টাকা। ডাকাতির সোনার খানিকটা মোবাইল ফোনের বাক্সেও লুকিয়ে রেখেছিল সে। পুলিসের অনুমান, লুট করা সোনার সিংহভাগই জসিমুদ্দিনের কাছে গচ্ছিত ছিল।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জসিমুদ্দিন তেলেঙ্গানায় গ্রিলের মিস্ত্রি হিসাবে কাজের উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিল। ২০২৩ সালে হরিয়ানার গুরুগ্রামে একটি সোনার দোকানে চুরির সঙ্গেও তার নাম জড়িয়েছিল। ওই মামলায় এখনও তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। স্থানীয়দের অনুমান, পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে কাজ করতে গিয়ে ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে পরিচয় হয়ে থাকতে পারে জসিমুদ্দিনের। তারপরেই হয়তো একাজে জড়িয়ে পড়েছে। তবে, স্থানীয়রা এর বেশিকিছু জানাতে চাননি জসিমুদ্দিন সম্পর্কে।