শ্রমশ্রী ঘোষণা হতেই কর্মসাথী পোর্টালে নাম তোলার হিড়িক
বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প চালু হতেই পোর্টালে নাম তোলার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। নিয়মানুযায়ী কর্মসাথী পোর্টালে নাম থাকলে তবেই শ্রমশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। যার জন্য বিগত কয়েকদিনে নদীয়া জেলাজুড়ে প্রায় দেড় হাজার পরিযায়ী শ্রমিক পোর্টালে নাম তোলার আবেদন করেছেন। অধিকাংশ আবেদন এসেছে কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, তেহট্ট, করিমপুর এই সমস্ত এলাকা থেকে। কারণ এই এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ইতিমধ্যেই নদীয়া জেলায় ১ লক্ষ ৫৭ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের নাম সরকারি খাতায় নথিভুক্ত আছে। তাঁরা শ্রমশ্রী প্রকল্পের আওতায় আসার সুযোগ পাবেন।
ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। বাড়ি ফেরার সময়ে এককালীন ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে তাঁদের হাতে। পাশাপাশি, পুরো এক বছরের জন্য মাসিক ৫ হাজার টাকা করে এক বছর ধরে ভাতা পাবেন প্রত্যেকে। শুধু তাই নয়, ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের দক্ষতা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগও করে দেওয়া হবে।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলে, কর্মসাথী পোর্টালে বহু পরিযায়ী শ্রমিকের নাম আগে থেকেই ছিল। শ্রমশ্রী প্রকল্প ঘোষণা হওয়ার পর থেকে আরও অনেক পরিযায়ী শ্রমিক কর্মসাথী পোর্টালে নাম তোলার জন্য আবেদন করছেন। কারণ কর্মসাথী পোর্টালে নাম থাকলে পরিযায়ী শ্রমিকরা শ্রমশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
নদীয়া জেলায় বহু পরিযায়ী শ্রমিক বাইরের রাজ্য শুধু নয়, বাইরের দেশেও কাজে যান। ওড়িশা, হরিয়ানা, ছত্তিশগড়, মুম্বই, কেরল, কর্ণাটক সহ বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেন তাঁরা। দুবাই, কাতারের মতো বাইরের দেশেও কাজে যান। সম্প্রতি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে নদীয়া জেলার বাঙালি শ্রমিকরা হেনস্তার কবলে পড়েছিল। বাংলাদেশি সন্দেহে অঘোষিত ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখে মারধর, ম্যারাথন জেরার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁদের। কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া, করিমপুর, তেহট্ট, চাপড়া সহ বিভিন্ন থানা এলাকায় এরকম বহু পরিযায়ী শ্রমিক বাইরের রাজ্যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। যদিও বর্তমানে তাঁদের অধিকাংশই ফিরে এসেছেন। আবার অনেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের এই হেনস্তার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জন্য শ্রমশ্রী প্রকল্প করেছেন তিনি। রাজ্যে ফিরে এসে যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে চান, তাঁদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ মোবাইল অ্যাপ ও একটি পোর্টাল তৈরি করছে শ্রমদপ্তর। কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কর্মসাথী পোর্টাল চালু করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা হয়। এবার শ্রমশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার শর্ত হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট পরিযায়ী শ্রমিকের নাম কর্মসাথী পোর্টালে থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রমশ্রী প্রকল্প ঘোষণার পর থেকেই যাঁরা এতদিনে নাম তোলেননি, তাঁদের কর্মসাথী পোর্টালে নাম তোলার আবেদন জমা পড়েছ। সোমবার পর্যন্ত নদীয়া জেলায় কর্মসাথী পোর্টালে নাম তোলার জন্য দেড় হাজার আবেদন জমা পড়েছে। প্রতীকী চিত্র