নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: টাকা চাই! তা নিয়ে বচসার জেরে মায়ের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করল ছেলে! সল্টলেকের সি জে ব্লকে একটি বাড়ির গ্যারাজে সোমবার তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মহিলা ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার ছিলেন। এই ঘটনার পরই বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিস দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম সরস্বতী মুর্মু (৫০)। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘী থানার দিয়াড়া এলাকায়। ধৃত ছেলের নাম মুন্না মুর্মু। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে ধৃত ছোটো ভাইয়ের চরম শাস্তির দাবি তুলেছেন মৃতার বড়ছেলে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতীদেবী অনেকদিন ধরেই সি জে ব্লকের ওই বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করছিলেন। বাড়িতে কেউ থাকতেন না। তিনি নীচের তলার গ্যারাজে থাকতেন। সরস্বতীদেবীর সঙ্গে থাকতেন তাঁর ছোট ছেলে মুন্নাও। ওই বাড়ির সামনে একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন সকালে সরস্বতীদেবী চা খেতে যেতেন। কিন্তু, সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় ওই চায়ের দোকানদারের সন্দেহ হয়। তিনি গ্যারাজের সামনে গিয়ে দেখেন, মহিলা পড়ে রয়েছেন। তিনিই বিধাননগর পূর্ব থানায় খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
চায়ের দোকানদারই পুলিসকে জানান, রবিবার রাতে টাকা নিয়ে ছেলের সঙ্গে বচসা হচ্ছিল। তিনি তা শুনেছেন। সোমবার সকাল থেকে ছেলেও উধাও। তারপর পুলিস চিরুনি তল্লাশি করে ওইদিনই ছোট ছেলে মুন্নাকে আটক করে। থানার পক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যদেরও খবর দেওয়া হয়। মৃতার বড়ছেলে চন্দন মুর্মুকে ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরায় সে খুনের কথা স্বীকারও করেছে। পুলিস জানতে পেরেছে, বেশিরভাগ
সময়ই সে নেশা করত। তাই মায়ের কাছে টাকা চাইত। তা নিয়েই গণ্ডগোল। তারপরই সে মাকে খুন করে দেয়। এমনকী, মাকে খুনের পর সে নেশা করতে চলে গিয়েছিল!
ধৃতকে মঙ্গলবার বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। ঘটনার তদন্তের জন্য ১০ দিনের জন্য পুলিসি হেফাজত নিতে চেয়ে পুলিস আদালতে আবেদন করে। আদালত ছ’দিনের পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেছে। -নিজস্ব চিত্র