বাংলার ঢাকিদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিলে আগুন জ্বলবে, হুঁশিয়ারি সাংসদ অরূপের
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৭ আগস্ট ২০২৫
দুর্গাপুজো মানেই ঢাকের শব্দ, এই সুর ছাড়া বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব কল্পনাই করা যায় না। প্রতিবছর অসংখ্য ঢাকি ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন পুজোর মরশুমে। তালিকায় রয়েছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র-সহ একাধিক রাজ্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের আবহে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বাংলার বাইরে গিয়ে ঢাকিদের হয়রানি বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে গ্রেফতার করা হবে না তো? আর সেই আশঙ্কাকেই সামনে এনে বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি দিলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী।
সোমবার বাঁকুড়ার তামিলিবাঁধ ময়দানে ডোম সমাজের এক সভায় উপস্থিত হয়ে সাংসদ সরাসরি বলেন, বাংলার বাইরে পুজোয় বাজাতে যাওয়া ঢাকিদের যদি বাংলাদেশি বলে গ্রেফতার করা হয়, তবে আগুন জ্বলবে, সংসদ অচল করে দেওয়া হবে। ডোম সমাজের অভিযোগ, বছরের পর বছর ঢাক বাজিয়ে সংসার চালালেও ভিনরাজ্যে গিয়ে প্রায়ই তাঁদের হেনস্থা হতে হয়। দুর্গাপুজো বা অন্যান্য উৎসবে আমন্ত্রিত হলেও অনেক সময় পরিচয়পত্র না থাকায় তাঁদের আটকানো হয়, এমনকি বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হয়। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই অরূপবাবুর তীব্র প্রতিক্রিয়া, বাংলার পুজো ঢাক ছাড়া হয় না। অথচ বাংলার ঢাকিদের বারবার অপমান করা হচ্ছে। এই অপমান বরদাস্ত করা হবে না।
তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। যদিও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার ঢাকিদের সমস্যার বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তাঁর কথায়, ঢাকিরা বাংলার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাঁদের ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ। তাই সম্মান ও সুরক্ষার দাবি একেবারেই যৌক্তিক। তবে তিনি একইসঙ্গে সতর্ক করেছেন, এ নিয়ে অযথা উত্তেজনা ছড়ানো উচিত নয়। প্রশাসনের প্রতি তাঁর আহ্বান, ঢাকিদের পরিচয় ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সভায় উপস্থিত ডোম সমাজের নেতারা এদিন ঢাকিদের সরকারি স্বীকৃতি এবং পরিচয়পত্র প্রদানের দাবিও তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, সারা দেশেই পুজোর সময়ে ঢাকিদের চাহিদা রয়েছে। অথচ পরিচয়জনিত সমস্যার কারণে জীবন-জীবিকা বারবার বিপন্ন হচ্ছে। এই আবহে বাংলার ঢাকিদের নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন রাজনৈতিক ইস্যু।