• পশ্চিম বর্ধমানে জেলাশাসক, SP পেলেন স্থায়ী কার্যালয়, একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস মুখ্যমন্ত্রীর
    এই সময় | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়: বর্ধমান জেলা ভেঙে পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৈরি হয়েছিল ২০১৭ সালে। বর্ধমানে অবিভক্ত জেলার প্রশাসনিক ভবনই হয় পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের দপ্তর, জেলা পুলিশের কার্যালয় হয় এসপির দপ্তর। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমা‍নে এত দিন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা এডিডিএ–র অফিসেরই একটি অংশে ছিল জেলাশাসকের অস্থায়ী দপ্তর।

    আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটেরও নিজস্ব ভবন ছিল না এত দিন। মঙ্গলবার বর্ধমান থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পশ্চিম বর্ধমানের নবনির্মিত জেলাশাসক দপ্তর তথা প্রশাসনিক ভবন ও পুলিশ কমিশনারেট ভবনের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। দুই বর্ধমানের একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের জন্য এ দিন মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বর্ধমানে।

    এই মঞ্চ থেকে এ দিন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে একটি স্কুল–সহ একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং নতুন সেতু ও রাস্তার শিলান্যাসও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সঙ্গেই তিনি দুই বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার কয়েকশো বাসিন্দার হাতে তুলে দিয়েছেন জমির পাট্টা।

    আসানসোলের কল্যাণপুরে গড়ে তোলা হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের বিশাল অফিস। আসানসোল সংশোধনাগারের অদূরে রাজ্য সরকার তৈরি করেছে পুলিস কমিশনারেট ভবন। এগুলির পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ওই জেলার জামুড়িয়ার আখলপুরে ৩০ শয্যার আরবান কমিউনিটি হেল্‌থ সেন্টার, সালানপুরের কল্ল্যা পঞ্চায়েতে রাস্তা, জামুড়িয়ার চুরুলিয়া ও বারাবনির ইটাপাড়ায় জল প্রকল্প, পান্ডবেশ্বরের ছোড়া এলাকায় সুস্বাস্থ্য ভবন এবং বারাবনির দোমোহনিতে পুনর্নির্মিত হাটতলার উদ্বোধন করেছেন।

    সব মিলিয়ে জেলায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হলো এ দিন। পূর্ব বর্ধমান জেলারও একাধিক প্রকল্পের তিনি উদ্বোধন করেছেন এ দিন। সেগুলির মধ্যে রয়েছে মন্তেশ্বরে ইন্টিগ্রেটেড ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, কেতুগ্রাম থেকে মঙ্গলকোটের নতুনহাট পর্যন্ত বাদশাহী সড়কের সম্প্রসারিত অংশ এবং ধাত্রীগ্রামে তাঁতের হাটে তন্তুজর প্রোকিওরমেন্ট সেন্টার ও ইয়ার্ন ডিপো কাম ওয়্যারহাউস।

    বর্ধমানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন পশ্চিম বর্ধমান জেলার ২৩টি প্রকল্পের ভার্চুয়াল শিলান্যাস করেন। মোট খরচ হবে ৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অন্যতম বরাকর–পুরুলিয়া রাস্তার সম্প্রসারণ।

    পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের খোট্টাডিহি কোলিয়ারির সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন এবং পূর্ব বর্ধমানের ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালকে ১২০ শয্যার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীতকরণ প্রকল্প, বর্ধমান–আরামবাগ রোডে দামোদরের উপরে শিল্প সেতু ও ইডেন ক্যানালের উপরে সেতু, গুসকরা–আউশগ্রাম–ছোঁড়া রাস্তা, কাটোয়া–করুই রাস্তা ও গলিগ্রাম–কুতরুকি–চণ্ডীপুর রাস্তা নির্মাণের কাজের শিলান্যাসও করেছেন তিনি।

    বর্ধমান–আরামবাগ রোডে সেতু নির্মাণে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৩৪৭ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালের উন্নয়নে রাজ্য সরকার ব্যয় করবে ২৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।

    মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বর্ধমানের অনুষ্ঠান থেকে জমির পাট্টা দেওয়ার কর্মসূচিরও সূচনা করেন। কয়েক জনের হাতে মঞ্চ থেকে পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। বাকিরা জেলাগুলির ব্লক অফিস থেকে পাট্টার কাগজ পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী সূচনা করার পরে এ দিনই সালানপুরে বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় পাট্টা বিলি করেন। পাণ্ডবেশ্বরেরও একশো জন বাসিন্দা পাট্টা পেয়েছেন। বাঁকুড়া জেলায় তিন মহকুমার সদর শহরেই এই উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল অনুষ্ঠানের।

    বাঁকুড়া শহরে জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে ১৫১ জনের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অনসূয়া রায়, জেলাশাসক সিয়াদ এন, পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি প্রমুখ। এ ছাড়া বিষ্ণুপুরে যদুভট্ট মঞ্চ থেকে ৩৯১ জন ও খাতড়ায় গুরুসদয় মঞ্চ থেকে ১৪৪ জনকে দেওয়া হয় জমির পাট্টা। পুরুলিয়ায় ১১২ জনের হাতে পাট্টা তুলে দেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়া সার্কিট হাউস থেকে হুড়া, পুরুলিয়া–১ ও পুরুলিয়া–২ ব্লক, পুঞ্চা, নিতুড়িয়া, সাঁতুড়ি, বলরামপুর ব্লক অফিস এবং রঘুনাথপুর মহকুমা শাসকের দপ্তর থেকে পাট্টা বিলি করা হয়।

  • Link to this news (এই সময়)