• খুনের পরেও কেন অপেক্ষায় ছিল দেশরাজ, তদন্ত
    আনন্দবাজার | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • কৃষ্ণনগরে বছর উনিশের ঈশিতা মল্লিক খুন হওয়ার পরেও কেন তাঁর বাড়িতে অপেক্ষা করেছিল খুনে অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ, কী কথা সে বলতে চেয়েছিল নিহত তরুণীর মায়ের সঙ্গে—তদন্তে নেমে একাধিক প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

    সোমবার দুপুরে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাড়িতে খুব কাছ থেকে ঈশিতার (১৯) মাথায় তিনটি গুলি করা হয়। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল, ঈশিতার চপ্পল, চুলের ক্লিপ এবং রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, সেভেন এমএম পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ধস্তাধস্তির চিহ্ন মিলেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ময়না তদন্তের পরে, পরিবারকে ঈশিতার মৃতদেহ দেওয়া হয়। রাতে নবদ্বীপ মহাশ্মশানে সৎকার করা হয়েছে।

    ঈশিতা যখন খুন হন, তাঁর মা কুসুম তখন ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন। তাঁরা বাড়ি ফিরলে দেশরাজ তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। পরে মেয়ের মৃতদেহ দেখে তিনি চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলে সে পালায়। পুলিশের দাবি, ঘটনার পরে কয়েক জনকে ‘ওয়টস্যাপ কল’ করে কিছু সময়ের জন্য আশ্রয় চেয়েছিল দেশরাজ। কিন্তু কেউ রাজি হননি।

    তদন্তে পুলিশ জেনেছে, যখন আশ্রয় চাইছে, তখন দেশরাজের পকেটে উত্তরপ্রদেশের ট্রেনের টিকিট ছিল। তার বাবা রঘুবিন্দরপ্রতাপ সিংহ বলেন, “উত্তরপ্রদেশে দেশের বাড়ি যাবে বলে ও সোমবারের ট্রেনের টিকিট কেটে দিতে বলেছিল। কেটেও দিয়েছিলাম।’’ তবে দেশরাজ উত্তরপ্রদেশেই পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান।

    পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তে দেশরাজের অপেক্ষা করার কারণ, ঈশিতার মায়ের সঙ্গে সে কী কথা বলতে চেয়েছিল, জানার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি, যে ভাবে খুব কাছ থেকে তিনটি গুলি করা হয়েছে, তাতে আক্রোশের ইঙ্গিত রয়েছে। কেন সেই আক্রোশ, পিস্তল দেশরাজ পেল কোথায়— দেখা হচ্ছে তা-ও। কৃষ্ণনগর পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মিত কুমার বলেন, “তদন্তে অনেক কিছুই আসছে। আশা করছি, খুব দ্রুত অভিযুক্তকে ধরব।” পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যারাকপুর ১ ব্লকের ধরমপুরে ভাড়াবাড়িতে মা, বোনের সঙ্গে থাকত দেশরাজ। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বাড়িতেও সে অশান্তি করত। ভাড়াবাড়ির মালিক সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অশান্তির জেরেই ওর মা, বোন কিছু দিন আগে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে দেশের বাড়িতে চলে গিয়েছেন।’’ রঘুবিন্দর বলেন, ‘‘ছেলে যদি এমন ঘটিয়ে থাকে, প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)