‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই ছাত্রভোট করাচ্ছে না, আমাদের বাধা নেই’! জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে বক্তব্য রাজ্য সরকারের
আনন্দবাজার | ২৭ আগস্ট ২০২৫
কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রভোট করাতে উদ্যোগী রাজ্য। কিন্তু কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই ভোট করতে আগ্রহ দেখায়নি! মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যার প্রেক্ষিতে প্রায় ৩৬৫টি কলেজ এবং ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে সংশ্লিষ্ট মামলায় পক্ষ (পার্টি) করার নির্দেশ দিল বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ।
দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। এই নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বলেন, ‘‘ছাত্রভোট করাতে কোথাও বাধা দেয়নি রাজ্য। এমনকি, ভোট করানোর জন্য সার্কুলার জারি করা হয়েছিল। কিন্তু কলেজগুলিই উদ্যোগী হয়নি।’’ পাল্টা মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, কোন কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এমনটা করছে, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে তথ্য দিক রাজ্য। তিনি বলেন, ‘‘আদালত এগুলো রেকর্ড করুক।’’ বস্তুত, তাঁদের দাবি, রাজ্যই ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ রেখেছে। আর ভোট করানোর জন্য দায়বদ্ধ রাজ্যই। তাই ভোট না-হলে দায়বদ্ধ থাকতে হবে তাদেরই।
সমস্ত পক্ষের সওয়ালের পর হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, এই মামলায় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পক্ষ করে মামলায় যুক্ত করতে হবে। আগামী নভেম্বর মাসে পরবর্তী শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়ে জনস্বার্থ মামলা মামলাটি করেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি হলফনামা তুলে ধরে তিনি জানান, রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কোনও ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। অনেক কলেজে দীর্ঘ দিন ধরে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। বর্তমানে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে কোনও কার্যকর ছাত্র সংসদ নেই। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরকে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, যে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধ ছাত্র সংসদ নেই অথবা সম্প্রতি ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, সেখানে ছাত্র সংসদের কক্ষ বা ‘স্টুডেন্ট ইউনিয়ন রুম’ তালাবন্ধ করে রাখতে হবে। কোনও ছাত্র রেজিস্ট্রার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া ইউনিয়ন রুমে প্রবেশ বা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনও ছাত্র যদি ইউনিয়ন রুমে প্রবেশের অনুমতির জন্য আবেদন করেন, তবে তার কারণ লিখিত ভাবে জানাতে হবে। এই নির্দেশ শুধুমাত্র ‘ছাত্র সংসদ কক্ষ’-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে জানায় আদালত।
অন্য দিকে, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং-এর অভিযোগ সম্পর্কে হাই কোর্টের বক্তব্য, এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ রয়েছে। একাধিক কমিটি গড়তে বলা হয়েছে। তার পরেও কোথাও পড়ুয়াকে হেনস্থার অভিযোগ থাকলে নির্দিষ্ট করে তাদের নাম উল্লেখ করতে হবে।