• প্রাথমিকে নিয়োগের আর্জি মমতার সভায়
    আনন্দবাজার | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • টেট পাশ করেও আড়াই বছরে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি মেলেনি। মঙ্গলবার বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা চলাকালীনই প্ল্যাকার্ড তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানালেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সে সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের একাংশ তাঁদের ছবি তোলা ও কথা বলার চেষ্টা করলে, বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। দৃশ্যত বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী কয়েক মিনিট বক্তৃতা বন্ধ রাখেন। প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, এর পর থেকে সভাস্থলে সংবাদমাধ্যমের জায়গার পিছনে ব্যারিকেড করতে হবে।

    মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা মিনিট ২৫ গড়ানোর পরেই, সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের বসার জায়গা থেকে তিন মহিলা প্ল্যাকার্ড হাতে উঠে দাঁড়ান। তাতে লেখা, ‘মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ চাই’, ‘দিদি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে কিছু বার্তা দিন’। অনুপমা গড়াই, আয়েষা খাতুন ও রেহেনা খাতুন নামে ওই তিন জনের দাবি, “বঞ্চনার শিকার হচ্ছি। দিদি অনেক প্রকল্প করেছেন। ওঁর সঙ্গেই আছি। হস্তক্ষেপ দাবি করেছি।’’

    ওই তিন জন ছাড়াও, এ দিন সভাস্থলের কাছে জড়ো হন ‘২০২২ টেট পাশ ডিএলএড ঐক্যমঞ্চ’-এর কয়েক জন সদস্য। শেখ আসিফ, সুদীপ্ত পান, সায়ন পালেরা জানান, ২০২২ সালে টেট উত্তীর্ণ হলেও, এখনও নিয়োগ পাননি। তাঁদের দাবি, “অবিলম্বে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।”

    বছর দুয়েক আগে বর্ধমানের গোদায় মমতার সভায় ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ কয়েক জন বিক্ষোভ দেখান। মুখ্যমন্ত্রী সে দিন সভার পরে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আয়েষারা জানান, এ দিনও মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কোনও আশ্বাস দেবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু তিনি সরাসরি কিছু বলেননি। এক পুলিশ আধিকারিক তাঁদের থেকে স্মারকলিপি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রের দাবি, খণ্ডঘোষ, পূর্বস্থলীর ওই মহিলারা কেউ ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ পান, কেউ স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যুক্ত। উপভোক্তা হিসেবে সভাস্থলে এসেছিলেন। প্ল্যাকার্ড লুকোনো ছিল।

    রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপি শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘ভাতার রাজ্যে চাকরি চায়, কী বিস্ময়! শিক্ষক নিয়োগ অত সহজ নয়, টাকা লাগবে অনেক বেশি।’’ তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের পাল্টা জবাব, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার সময়ে বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ১১ বছরে দু’লক্ষ চাকরিও হয়নি। তাঁর দলের নেতার মুখে এ সব কথা মানায়?’’

    শিক্ষা দফতর সূত্রের দাবি, ওবিসি সংক্রান্ত মামলার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে ছিল। প্রাথমিকেও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)