• জোয়ার দেখেই গঙ্গায় নামেন, ভেসে যাওয়ার সময়েও চিৎকার করেননি! প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরেও বৃদ্ধের খোঁজ মিলল না...
    আজকাল | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গঙ্গার ঘাটে ফের বিপত্তি। কোন্নগরে গঙ্গায় নেমে তলিয়ে গেলেন বৃদ্ধ। তল্লাশি চালিয়েও খোঁজ মেলেনি সন্ধা পর্যন্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোন্নগর সুইমিং ক্লাব এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ পাত্র (৭১) মঙ্গলবার দুপুরে কোন্নগর সাধুর ঘাটে যান। প্রতিদিন স্নান করে গঙ্গা জল নিয়ে বাড়ি দিয়ে আসেন সকালে।দুপুরে আবার গঙ্গার ঘাটে ফিরে আসেন। গতকাল বেশ কিছু সময় বসে ছিলেন। তারপর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সময় ফুটবল মাঠে রেফারি ছিলেন পঙ্কজ। বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। গতকাল যখন তিনি গঙ্গায় নামেন সে সময় জোয়ার ছিল। তাঁকে বাঁচাতে  সে সময় ঘাটে থাকা স্থানীয় দুই যুবক গঙ্গায় নেমে উদ্ধারেরচেষ্টা করেন। কিন্তু বৃদ্ধের নাগাল পাননি কেউ।

    ঘটনাটি নিয়ে খবর দেওয়া হয় উত্তরপাড়া থানায়। ঘটনাস্থলে আছে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। জলে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।খবর পেয়ে গঙ্গার ঘাটে আসেন বৃদ্ধের আত্মীয়রাও।ঘাটের উপর তাঁর চটি জোরা খোলা পড়েছিল তখনও।

    খবর পেয়ে কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, 'বৃদ্ধের পরিবার জানিয়েছে কোনওভাবে যাতে তাঁর দেহটা পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে। প্রশাসন সব রকম চেষ্টা করছে।'প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, 'জোয়ার আসার সময় সোজা গঙ্গায় নেমে যান বৃদ্ধ। জোয়ারে ভেসে গেলেও বাঁচার চেষ্টা করেননি।' 

    প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে হুগলির মাহেশের সুরকি ঘাটে। স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী, যিনি এলাকায় বুড়ো নামে পরিচিত, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে জলে তলিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরদিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক (এসডিও) শম্ভুদীপ সরকার, এসিপি শুভঙ্কর বিশ্বাস, শ্রীরামপুর ও রিষড়া পুরসভার দুই পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা ও বিজয় সাগর মিশ্র এবং শ্রীরামপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান অমিয় মুখার্জি। প্রতিনিধিদল ঘাট এলাকা ঘুরে দেখেন এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। পরবর্তীতে এসডিও শম্ভুদীপ সরকার জানান, সাময়িকভাবে সুরকি ঘাটটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‌এই ঘাটে এখন থেকে কেউ স্নান বা অন্য কোনও কাজ করতে পারবেন না। সুরকি ঘাট গঙ্গার একটা বিপজ্জনক বাঁকে আছে। তাই স্রোতের টান বেশি। বারবার এখানে জলে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।’‌

    উল্লেখ্য, খুব কম সময়ের মধ্যে এই ঘাটেই চারজনের মৃত্যু হয়েছিল গঙ্গায় ডুবে। গত ২৫ মে চার নাবালক স্নান করতে নেমে ডুবে যায় সুরকি ঘাটে। ওইদিন আরও এক ব্যবসায়ী তলিয়ে গেলেন। বারবার এমন দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তবে স্থায়ীভাবে ঘাটটি কীভাবে আরও নিরাপদ করা যায়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ারও দাবি তুলেছেন তাঁরা। 

    এর আগে গত এপ্রিল মাসে উত্তরপাড়া থানার অন্তর্গত কোন্নগর বারোমন্দির গঙ্গার ঘাটে স্নান করতে নেমে গঙ্গায় তলিয়ে গেছিল দুই স্কুল ছাত্র। স্পিড বোট নিয়ে তল্লাশি চালায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কোন্নগর অ্যালকালি মাঠে খেলতে আসে কয়েকজন স্কুল পড়ুয়া। খেলা শেষ হয়ে গেলে একসঙ্গে পাঁচজন ছাত্র কোন্নগর বারো মন্দির ঘাটে গঙ্গাস্নান করতে যায়। স্নান করতে করতে হঠাৎই দু'জন তলিয়ে যায়। তিনজন উঠে গেলেও বাকি দু'জন আর জল থেকে উঠতে পারেনি।
  • Link to this news (আজকাল)