MLA জীবনকৃষ্ণের এত সম্পদ কীভাবে? তদন্তে উঠে আসছে বিস্ফোরক তথ্য
আজ তক | ২৭ আগস্ট ২০২৫
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে যতই জেরা করা হচ্ছে, ততই উঠে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। চলতি সপ্তাহেই সোমবার জীবনকৃষ্ণ সাহাকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। মোবাইল ফোন নর্দমায় ফেলে দিয়ে পাঁচিল টপকে পাঁকের পুকুরে লুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বড়ঞার বিধায়ক। এহেন জীবনকৃষ্ণকে জেরা করে ও তদন্তে তাঁর যে পরিমাণ সম্পত্তির তথ্য উঠে আসছে, তা রীতিমতো চমকে দেওয়া।
কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে জীবনকৃষ্ণের
India Today-এর কাছে যে এক্সক্লুসিভ তথ্য এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে জীবনকৃষ্ণের। এজেন্সির তদন্তে উঠে এসেছে, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এই বিশাল মানি লন্ডারিং বা আর্থিক তছরুপের চক্রে জড়িত ছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। অভিযোগ, জীবনকৃষ্ণ এবং তাঁর সহকর্মীরা নগদ টাকা ব্যবহার করে অসংখ্য জমি ও আবাসিক সম্পত্তি কিনেছেন। একাধিক নামে ও বেনামে জমি, বাড়ি কিনেছেন।
প্রায় সব লেনদেনই হয়েছে নগদে
এই গোটা দুর্নীতি প্রক্রিয়ায় জীবনকৃষ্ণ সাহার মূল সহযোগী ছিলেন মায়ারানি সাহা। মায়ারানি তৃণমূলের কাউন্সিলর ও জীবনকৃষ্ণের পিসি। এছাড়াও ছিলেন নিতাই সাহা, রাজেশ ঘোষ এবং গৌর সাহা। এরা মিলে বিভিন্ন সম্পত্তি ক্রয় করেছেন, প্রায় সব লেনদেনই হয়েছে নগদে। জেরায় জীবনকৃষ্ণ সাহা প্রথমে দাবি করেন, টাকা তাঁর সঞ্চয় ও বাবার দেওয়া উপহার থেকে এসেছে। কিন্তু তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহা ইডিকে জানিয়েছেন, কখনও তিনি ছেলে জীবনকে টাকা দেননি এবং তাঁর ব্যবসাতেও জীবনকৃষ্ণ যুক্ত নয়। বিশ্বনাথ সাহা আরও জানান, এই সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য যে টাকা ব্যবহার হয়েছে, তা 'অযোগ্য প্রার্থী'দের কাছ থেকে অসাধু উপায়ে আদায় করা হয়েছিল জীবকৃষ্ণ। চাকরি করে দেওয়ার বিনিময়ে।
জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে ৪৬ লাখ টাকার বেশি নগদ জমা ধরা পড়েছে
ইডি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কের হিসেব বিশ্লেষণে জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে ৪৬ লাখ টাকার বেশি নগদ জমা ধরা পড়েছে দেখা গিয়েছে। তদন্তে আরও পাওয়া গেছে, দুটি আলাদা লেনদেনে SBI ব্যাঙ্কে ৫ লাখ টাকা জমা হয়েছে। একটি চাকরির জন্য জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ১২ লাখ টাকা দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৫ লাখ পরে HDFC ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হয়।
এই তথ্য সামনে এলে সাহা দাবি করেন, তিনি লেনদেন জানতেন না এবং জমি ক্রয় হিসেবেই তা হয়েছে, কিন্তু কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও তৃণমূল বিধায়কের আরও দাবি, তিনি কারও কাছ থেকে কোনও টাকা পাননি। যদিও ব্যাঙ্কের রেকর্ডের সঙ্গে এ দাবি মেলেনি।
জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের জন্য বীরভূমের এক ব্যক্তি বিপুল পরিমাণে টাকা তুলেছিল। সেই সূত্র ধরেই এবার আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি পৌঁছয় জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে। ওই ব্যক্তিও এদিন ছিলেন ইডির সঙ্গে। তবে শুধুই মুর্শিদাবাদের বড়ঞা নয়। তৃণমূল বিধায়কের রঘুনাথগঞ্জের শ্বশুরবাড়িতেও হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।