• হাইটেক সরকারি স্কুল, পড়ুয়াদের গতিবিধি জানাতে মোবাইল অ্যালার্ট, চালু ডিজিটাল ডেটা ব্যাঙ্ক, ফাঁকি রুখতে ফেস রিকগনিশন
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৫
  • সোমেন পাল, গঙ্গারামপুর: সরকারি স্কুলে এক অন্যরকম ছবি। পড়ুয়াদের জন্য হাইটেক ব্যবস্থাপনা চালু করে নজর কাড়ছে কুশমণ্ডি হাইস্কুল। পড়ুয়ারা কখন স্কুলে আসছে, বের হচ্ছে-সব তথ্যের রিয়েল টাইম আপডেট পাবেন  অভিভাবকরা। তাঁদের মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে জানানো হবে সন্তানদের গতিবিধি। এছাড়া স্কুলে তৈরি হয়েছে ডিজিটাল ডেটা ব্যাঙ্ক। যার সুবিধা নিতে পাবেন প্রাক্তনীরাও। জেলার প্রান্তিক ব্লক কুশমণ্ডি সদরের এই স্কুল এখন পরিকাঠামোর দিক থেকে পাল্লা দেবে যে কোনও বেসরকারি স্কুলকে। জেলায় সরকার অনুমোদিত নামকরা স্কুল থাকলেও সময়ের দাবি মেনে সেভাবে ডিজিটাল ও প্রযুক্ত নির্ভর ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি। সেদিক থেকে কুশমণ্ডি হাইস্কুল সরকারি শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাচ্ছে। তাই এই স্কুলের ব্যবস্থাপনাকে মডেল করার ভাবনা জেলা স্কুল পরিদর্শকের।

    স্কুলছুট রুখতে ও অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ই-ডায়েরি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। এজন্য বছরে বাড়তি ৩০ টাকা দিতে হয় অভিভাবকদের জন্য। এই অর্থে স্কুল কর্তৃপক্ষ একটি কিউআর কোড, ডিজিটাল আইডি কার্ড ও অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার দেয় ভর্তির পর। ই-ডায়েরি অ্যাপের মাধ্যমে অভিভাবকদের ছাত্রদের গতিবিধি সম্পর্কে জানানো হয়। প্রত্যেকদিন পড়ুয়ারা স্কুলে ঢোকার মুখে গেটের সামনে লাগানো স্ক্যানারে আইডি কার্ড স্ক্যান করে ঢোকে। সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ চলে যায়  অভিভাবকদের কাছে। বের হওয়ার সময়ও একই পদ্ধতি চালু রয়েছে।   এক্ষেত্রে পড়ুয়ারা যাতে সহপাঠীদের হাতে আই কার্ড পাঠিয়ে হাজিরা এড়াতে না পারে, সেজন্য রয়েছে ফেস রিকগনিশন ব্যবস্থা। 

    স্কুলে ২০১৬ সাল থেকে প্রাক্তনীদের সমস্ত ডেটা ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ করা হয়েছে। গ্রুপ ‘সি’ ও ‘ডি’ কর্মীদের গতানুগতিক ক্লাস শেষে ঘণ্টা বাজানোর ব্যবস্থাতেও ইতি টেনেছে কর্তৃপক্ষ। বেল বাজানোর সঙ্গে টিফিনের সময় পরিস্রুত পানীয় জল পান করা থেকে বাইরের খাবার বর্জনের বিষয়ে সচেতন করা হয় পড়ুয়াদের। হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ৩ হাজার ১৬৪ জন পড়ুয়া। প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ বলেন, ২০২৪ সাল থেকে স্কুলের কাজকর্ম ডিজিটাইজেশন করেছি। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। কেউ টানা ১০ দিন স্কুলে না এলে আমাদের কাছে অ্যালার্ট আসে। তখন কারণ জানতে চাওয়া হয় অভিভাবকদের কাছে। পরীক্ষার রেজাল্ট হোক বা অনুষ্ঠান, সবটাই অভিভাবক, পড়ুয়ারা জানতে পারেন ই-ডায়েরি অ্যাপ থেকে।

    স্কুলের ব্যবস্থাপনায় এমন বদল দেখে প্রশংসা করেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (উচ্চ মাধ্যমিক) দেবাশিস সমাদ্দার। তাঁর কথায়, কুশমণ্ডি হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগের তুলনা নেই। কুশমণ্ডিকে মডেল করে জেলার বাকি স্কুলগুলিকে এমন ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে বলব।  স্কুলের গেটে আইডি স্ক্যানার। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)