অর্ণব আইচ: খুচরো বড় সমস্যা। পকেট থেকে শুধু খুচরো পয়সা কেন, দশ বা কুড়ি টাকার নোটও বের করতে চান না অনেকে। তা বলে কি ভক্তদের প্রণামী থেকে বঞ্চিত হবেন গণপতি? ভক্তদের প্রণামী গ্রহণে এবার বিনায়কও আধুনিক। খুচরো সমস্যা এড়াতে এবার গণেশ পুজোয় চালু ইউপিআই। শুধু মোবাইলে কিউআর কোড স্ক্যান করলেই হল। প্রণামীর টাকা সরাসরি অনলাইনে পৌঁছে যাবে ক্লাবের অ্যাকাউন্টে।
লোকে না কি এখন পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে বাজারে যায় না। তার বদলে তাঁদের হাতে থাকে মোবাইল। তাঁরা দোকান আর বাজার থেকে জিনিস কিনে পকেট থেকে টাকা বের করে গুণে দেন না দোকানির হাতে। দরাদরির পর দরের সংখ্যা তাঁরা শুধু টাইপ করেন মোবাইলের স্ক্রিনে। সরাসরি টাকা পৌঁছে যায় বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে। সব্জি বা মাছ বিক্রেতা থেকে শুরু করে ছোট বা বড় দোকান, সব জায়গায়ই ইউপিআই ব্যবহার করা যায়। তাহলে পুজোর ক্ষেত্রেই বা নয় কেন? শুরু গণেশ চতুর্থী (Ganesh Puja)। এবার দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের গণপতি ভক্ত মণ্ডল প্রণামীর জন্য চালু করল ইউপিআই।
গণপতি ভক্ত মণ্ডলের কর্ণধার গোপী ঠক্কর জানান, গত বছরও ভক্তর পুজো মণ্ডপ দর্শন করার পর প্রণামী দিয়েছেন। কিন্তু অনেক ভক্তই তাঁকে ও পুজো কমিটির অন্যদের জানান যে, তাঁদের কাছে অনেক সময়ই থাকে না দশ বা কুড়ি টাকা। আবার অনেক সময় পকেটে নগদ টাকা না থাকার কারণে মন চাইলেও বেশি টাকা প্রণামী দিতে পারেন না ভক্তরা। তাই গণেশ ভক্তদের ইচ্ছা পূরণ করতেই এই বছর পুজো মণ্ডপের সামনে বসানো হয়েছে পেল্লাই মাপের দু’টি কিউআর কোড। তার উপর লেখা রয়েছে ‘প্রণামী’। ওই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই ইচ্ছামতো প্রণামী দিতে পারবেন ভক্তরা। তা পাঁচ টাকাই হোক, অথবা পাঁচশো টাকা, পুরোটাই জমা পড়বে এই পুজো ক্লাবের অ্যাকাউন্টে। ওই টাকা পুজোরই কাজে লাগানো হবে। পুজো উদ্যোক্তাদের মতে, এর ফলে সুবিধা হবে ঠাকুর দর্শনার্থী তথা ভক্তদের। কেউ নগদ টাকায় প্রণামী দিতে চাইলে সেই ব্যবস্থাও থাকছে। আবার বহু সংখ্যক ভক্তই মোবাইল স্ক্যান করে প্রণামী দিতে পারবেন বলে অভিমত পুজো উদ্যোক্তাদের।
গণেশ পুজোর পর সামনেই দুর্গাপুজো, কালীপুজো। সারা বাংলাজুড়ে চলবে উৎসব। মণ্ডপ দর্শনার্থী ও পুজো উদ্যোক্তারা ঠাকুর দর্শন করে প্রণামী দেবেন। ভবানীপুরের এই গণেশপুজো উদ্যোক্তাদের মতে, তাঁদের পর এবার অন্য পুজোর উদ্যোক্তারাও খুচরোর সমস্যার কথা মাথায় রেখে মণ্ডপের সামনে প্রণামী বাক্সের সঙ্গে সঙ্গে রাখতে পারেন কিউআর কোড। অনলাইনে সেই টাকা পৌঁছে যাবে পুজো কমিটিরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।