• ওয়ার্ডের ভিতরের বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার পচাগলা দেহ
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির পচাগলা মৃতদেহ৷ যে ঘরে মৃতদেহটি ছিল তার ঠিক পাশের ঘরেই ভর্তি ছিল রোগীরা৷ পচা দুর্গন্ধে তাঁর কেউ বমি করছেন৷ কেউ নাকে রুমাল চাপা দিয়ে রয়েছেন৷ বুধবার দুপুরে খবর চাউর হতেই কাটোয়া থানার পুলিস এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে৷ অকুস্থলে কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি সহ পুলিস বাহিনী আসে৷ এসডিপিও বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ 

    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পুরুষ বিভাগের ভিতর একটি পরিত্যক্ত স্টোর রুমে মৃতদেহটি পড়েছিল। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, বেশ কয়েকদিন আগে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে ষাটোর্ধ্ব ওই ব্যক্তির৷ পরণে কিচ্ছুটি ছিল না৷ মাথা সহ সারা শরীরে পোকা গিজগিজ করছে৷ মাছির চাঁক হয়ে গিয়েছে মৃতদেহ থাকা ঘরেতে৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই রোগীরা দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন৷ কিন্তু কেউ গন্ধ কোথা থেকে আসছে তা বলতে পারছিলেন না৷ এদিন ওয়ার্ডের বাইরে থেকে খোলা জানালা দিয়ে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন সবাই৷ তারপরেই শোরগোল শুরু হয়ে যায়৷ কীভাবে ওয়ার্ডের ভিতরে পচাগলা মৃতদেহ এল, তার মৃত্যু কীভাবে হল, পরিচয় কী, রোগী না রোগীর বাড়ির কোনও আত্মীয়, এসব একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিস৷ 

    কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব দত্ত বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাছাড়া হাসপাতালের ভিতরে থাকা সিসি ক্যামেরা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছি৷

    এদিন সুকুমার পাল নামে কাটোয়া শহরের চাঁপাপুকুর পাড় এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, আমি পাঁচদিন ধরে ভর্তি রয়েছি হাসপাতালে৷ আমার বেডের কয়েক মিটার দূরেই ওই পচা মৃতদেহ ছিল৷ আমি বার বার বমি করছি। নার্সদের বলছি৷ কিন্তু আমার কথা কেউ শোনেনি৷ ইসরাফিল বিবি বলেন, দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না৷ মৃতদেহ উদ্ধারের সময়ে অনেক রোগীই আঁতকে উঠেছেন৷ 

    কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের উপর মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদীয়া ও পূর্ব বর্ধমান জেলার মানুষের একাংশ নির্ভরশীল৷ তাই প্রতিদিন রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় কর্মীদের। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রসূতি, পুরুষ, মহিলা, শিশু সহ মোট ২৮৬টি শয্যার অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে জায়গা অপরিসর থাকায় ২৫৬টি শয্যা রয়েছে। 

    হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে পচাগলা দেহ রইল বেশ কয়েকদিন ধরে, কিন্তু তা কারও নজরে এল না কেন, কীভাবেই বা সেখানে মৃতদেহ পাওয়া গেল, হাসপাতালের পুরুষ বিভাগের নার্সরা দেখলেন না কেন, ইত্যাদি প্রশ্ন তুলছেন রোগীদের ক্ষুব্ছ আত্মীয়স্বজনরা। পুরুষ বিভাগের নার্সিং ইনচার্জ সুচিত্রা সেন বলেন, আমি দেখেনি। মৃতদেহ দেখে মনে হচ্ছে বেশ কয়েকদিন আগেকার। কীভাবে এমনটা হল বুঝতে পারছি না৷  তদন্তে পুলিস। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)