মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়া বাড়ল, ফের প্লাবনের শঙ্কা
বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে রেকর্ড পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে। আগে ১৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল। ড্যামের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার রাত জল ছাড়া বাড়ানো হয়েছে। বুধবার থেকে কংসাবতী নদীতে ২০হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খাতড়া মহকুমার নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নিম্নচাপের বৃষ্টির কারণে মহকুমার একাধিক ব্লকের নিচু এলাকার ধানজমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমন চাষিরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। কংসাবতী নদীর পাশাপাশি ক্যানেলেও জল ছাড়া হচ্ছে। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটির কথা শুনিয়েছে হাওয়া অফিস। এই ‘ত্র্যহস্পর্শ’যোগ চাষিদের অবস্থা করুণ করে তুলতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা।
খাতড়ার মহকুমা শাসক শুভম মৌর্য বলেন, জল ছাড়ার বিষয়টি সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আগাম জানিয়ে দেন। ওই গ্রুপে বিডিও, থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সহ পুলিস ও প্রশাসনের অন্যান্য অফিসাররা রয়েছেন। আমরা বিডিওদের সতর্ক থাকতে বলেছি। নিচু এলাকাগুলির দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশাসন তৈরি রয়েছে।
সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, এখন মুকুটমণিপুর ড্যামে ৪৩১.২০ ফুট জলস্তর রয়েছে। ড্যামের জলধারণ ক্ষমতার একটি সীমা রয়েছে। তার বেশি হলে ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে জল ছাড়ার হার বাড়ানো অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। সেকারণে আমরা বর্তমানে ২০হাজার কিউসেক হারে জল নদীতে ছাড়া হচ্ছে। নদীর পাশাপাশি কংসাবতী প্রকল্পের সেচখালেও জল ছাড়া হচ্ছে। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আমন ধান চাষে সবচেয়ে বেশি জলের প্রয়োজন হয়। ধান গাছের উপর দিয়ে জল বয়ে গেলে ধানের ক্ষতি পারে। ধানের চারা ডুবে থাকলে তা মরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নদীতে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে প্রয়োজনে সেচখালের জল নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। সেক্ষেত্রে বৃষ্টির অতিরিক্ত জল জমি থেকে সেচখাল হয়ে বয়ে নদী বা খালবিলে চলে যাবে। কিন্তু নদীর মতোই সেচখাল কানায় কানায় পূর্ণ থাকলে জমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকবে। তখন চাষিদের বিপাকে পড়তে হবে। যদিও উঁচু এলাকার ধানজমিগুলির ক্ষেত্রে সেচখালের জল কিছুটা সহায়ক হতে পারে। সবকিছুই প্রয়োজন অনুসারে