ওড়িশায় সহকর্মীদের বিরুদ্ধে পরিযায়ী শ্রমিককে খুনের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: সামশেরগঞ্জের এক পরিযায়ী শ্রমিককে ওড়িশায় কুড়োল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে সহকর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে ফোন মারফত গ্রামের বাড়িতে ওই শ্রমিকের মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছয়। মৃতের নাম লোকমান শেখ (৪৫)। তাঁর বাড়ি সামশেরগঞ্জ থানার দেবীদাসপুরে। গত রবিবার থেকে ওই শ্রমিক নিখোঁজ ছিলেন। এদিন সকালে তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ওড়িশা পুলিস। তাঁরই সহকর্মীরা মিলে খুন করেছে বলে পরিবারের দাবি। দু’জনকে গ্রেপ্তারও করেছে ওড়িশা পুলিস। তবে মূল দুই অভিযুক্ত গা ঢাকা দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিস জানিয়েছে, পরিবারের পক্ষ থেকে লিখত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সহকর্মীরা তাকে খুন করেছে বলে জেনেছি। দেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেহ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। জানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে সামশেরগঞ্জের ঘমেশ্যামপুর গ্রামের দুই শ্রমিকের সঙ্গে ওড়িশার পুরুষোত্তমপুর থানা এলাকায় কাজে যান লোকমান সাহেব। গত রবিবার বিকেলে পরিবারের সঙ্গে ফোনে শেষবারের মতো কথা বলেন। তারপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি মৃতের স্ত্রী লালবানু বিবি। সহকর্মীদের মোবাইলে ফোন করলে সে ভাড়াবাড়িতে ফেরেনি বলে জানায়। জানা গিয়েছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে ভাড়াবাড়িতে ফেরেন লোকমান। খাওয়ার সময় তার ভাগের মাছ কেন রাখা হয়নি তা সহকর্মীদের কাছে জানতে চান। সহকর্মীরা মাছ খেয়ে ফেলেছে জানতে পেরে তিনি প্রতিবাদ করেন। এই নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে। বচসা চরমে উঠলে সহকর্মীরা কুড়োল নিয়ে তেড়ে যান। ভয়ে তিনি পালিয়ে যান। তারপর থেকে আর ভাড়াবাড়িতে ফেরেনি। তাঁর স্ত্রী সহকর্মী ও ভাড়াবাড়ির গার্ডকে একাধিক বার ফোন করলে তারা লোকমানের কোনও খবর জানাতে পারেনি। ঘটনার পর থেকেই দুই সহকর্মী ভাড়াবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাদের মোবাইলও বন্ধ রয়েছে। এদিন সকালে স্থানীয় একটি জঙ্গল থেকে ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিস। ভাড়াবাড়ির নাইট গার্ড ও এক সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস। মৃতের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে ওরা কুড়োল দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। মুখ ও দেহের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওরাই খুন করে ফেলে পালিয়েছে। আমার স্বামী কে তো আর ফিরে পাব না, কিন্তু অপরাধীরা যেন ছাড়া না পায়। ওদের কঠোর শাস্তি দিক পুলিস। এদিন দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিস। ময়নাতদন্তের পরই দেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে বসা হবে। মৃতের পরিবারের সমস্যা দেহ নিয়ে আসতে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছে।