• স্বামীকে কুপিয়ে খুন, ফেরার স্ত্রী
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বামীকে কুপিয়ে খুন! তারপর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা। সুযোগ বুঝে বাড়ি ছেড়ে চম্পটও দিলেন অভিযুক্ত স্ত্রী। বুধবার এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল ছড়ায় বাগুইআটির জগৎপুর চড়কতলায়। রক্তাক্ত অবস্থায় স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম ভোলা হালদার (৩৫)। তিনি কলকাতা এয়ারপোর্টে কাজ করতেন। ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলেন। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, পলাতক স্ত্রীই এই খুনে যুক্ত। সেই সঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির যোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোলা এবং অভিযুক্ত স্ত্রী দু’জনেই দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন। বেশকিছুদিন যাবৎ সস্ত্রীক বাগুইআটি থানার অন্তর্গত জগৎপুর চড়কতলা এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। তবে, নিজেদের ঝগড়া ও অশান্তির জন্য এদিন ওই বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। বাড়ি মালিক ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুলিস জানতে পেরেছে, প্রায়ই দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হতো। তাঁদের গণ্ডগোল সকলেই শুনেছেন। এদিন সকালেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যাপক অশান্তি হয়। আশপাশের লোকজনও সেই চিৎকার শুনেছিলেন। বাড়ির নীচের তলায় তাঁরা থাকতেন। উপরতলায় থাকতেন বাড়ি মালিক।

    এদিন দুপুরের দিকে মালিক পরিবারের সদস্যরা পোড়া গন্ধ পান। তাঁরা নীচের তলায় তিনি এসে দেখেন, ভোলার স্ত্রী কিছু পোড়াচ্ছেন। তাঁকে প্রশ্ন করতেই তিনি এড়িয়ে যান। ভোলার খোঁজ করলে বলেন, উনি কাজে বেরিয়ে গিয়েছেন। তারপরই অভিযুক্ত স্ত্রী চম্পট দেন। পোড়া গন্ধের খোঁজ করতে গিয়ে এলাকার লোকজন বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখেন, বাথরুমে ভোলাবাবু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বাগুইআটি থানার পুলিস পৌঁছয়। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

    খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিধাননগর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ঝুঙ্কু মণ্ডল। তিনি বলেন, আমরা এলাকায় সবদিকে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। অভিযুক্ত স্ত্রী কোনওদিকে পালিয়েছে, তা দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে। আমরাও পুলিসকে বলেছি, বিষয়টি দেখতে। মৃতের স্ত্রী খুনের পর কোনও নথিপত্র পোড়াচ্ছিলেন। বাড়িতে ব্যাগও গোছানো ছিল। আগে থেকেই পালাবার ছক ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। 

    পুলিস জানিয়েছে, পলাতক স্ত্রী এই খুনে যুক্ত। তার কিছু নমুনা মিলেছে। মৃতের শরীরের একাধিক জায়গায় ক্ষত রয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত স্ত্রী’র খোঁজ চলছে। আরও অন্য কেউ কোনওভাবে যুক্ত আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)