• কর ফাঁকি? ট্যাক্স আদায়ে ঝাড়খণ্ডের পিছনে গুজরাত!
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আম্বানি-আদানিদের ভিটেমাটি। বিনিয়োগের ‘পীঠস্থান’। নতুন গাড়ির মডেল বাজারে এলে মুম্বইয়ের সঙ্গে উদ্বোধন হয় আমেদাবাদেও। অর্থাৎ, বাজার অর্থনীতি মনে করে, এই রাজ্যে বাস দেশের অন্যতম ধনীদের। তাই তো এই রাজ্য নরেন্দ্র মোদির ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’! তবে শুধুই প্রচারে। উচ্চ করদাতাদের রাজ্যওয়াড়ি তালিকায় প্রথম দশে নামই নেই এহেন ‘ধনী’ গুজরাতের। বরং আয়কর আদায়ের নিরিখে তাদের স্থান ‘দরিদ্র’ ঝাড়খণ্ডেরও নীচে! ২০২৪-২৫ সালে আয়কর রিটার্ন ফাইলের তথ্য বিশ্লেষণের পর অবাক করা এই পরিসংখ্যান সামনে আসছে। সম্পদশালীদের রাজ্য বলে এতকালের ধারণার সমূলে আঘাত করছে এই তথ্য। তাহলে কি করফাঁকির প্রতিযোগিতা চলছে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের রাজ্যে? উঠছে সেই প্রশ্নও। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন তো সাফ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পুরো নাম হল নরেন্দ্র জুমলা মোদি। ব্যর্থ গুজরাত মডেলের এটি আরও একটি উদাহরণ।’ মিডিয়া রিপোর্টের পরিসংখ্যান পোস্ট করে তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সদস্য জহর সরকারের খোঁচা, ‘গুজরাতে কি কোনও ধনী মানুষ নেই? উপার্জন কম দেখিয়ে কর দেওয়াটা কি গুজরাত মডেলেরই অংশ?’

    তথাকথিত ‘গুজরাত মডেলে’র পোস্টারবয় হলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিল এই ‘গুজরাত মডেল’। যদিও আয়কর রিটার্ন ফাইলের তথ্য বিশ্লেষণ ‘সম্পদশালী গুজরাতে’র সেই পরিচিত ধারণাকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, ঝাড়খণ্ডে ২০ শতাংশ করদাতা জানিয়েছেন, তাঁদের উপার্জন ১২ থেকে ৫০ লক্ষের মধ্যে। যদিও ‘ধনী রাজ্য’ গুজরাতে এমন করদাতার সংখ্যা মাত্র ৭ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ২৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ উপার্জনকারী করদাতার সংখ্যার নিরিখে প্রথম দশটি রাজ্যের তালিকাতেও নেই গুজরাতের নাম। এক্ষেত্রে সবার উপরে মহারাষ্ট্র। সেখানে এই শ্রেণির করদাতার সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৭ হাজার। তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে কর্ণাটক (১ লক্ষ ৩০ হাজার) ও তামিলনাড়ু (৭৮ হাজার)। গুজরাত প্রথম দশে না থাকলেও ষষ্ঠস্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এরাজ্যে ২৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ উপার্জনকারী করদাতার সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার।

    রিপোর্ট বলছে, ভারতে ট্যাক্স ফাইলার্সদের সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী নিজেদের উপার্জন ২.৫ লক্ষ থেকে ৭.৫ লক্ষের মধ্যে বলে দেখিয়েছেন। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অর্ধেকেরও বেশি এই গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ২.৫ শতাংশের উপার্জন ২৫ লক্ষের বেশি। ভারতে উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণি কতটা সীমিত, এই পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট। ভারতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির সিংহভাগেরই উপার্জন কিন্তু বছরে ৭.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে। 
  • Link to this news (বর্তমান)