• আগুন লাগলে কামরাটিকে আলাদা করতে পারবেন অন বোর্ড কর্মীরাই
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: আচমকা আগুন লাগলে সংশ্লিষ্ট কোচটিকে ট্রেন থেকে আলাদা করে দিতে পারবেন ‘অন বোর্ড’ রেল কর্মীরাই। আপতকালীন পরিস্থিতিতে এহেন ‘আনকাপলিং’য়ের জন্য আর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীদের অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে না। ফলে হতাহতের আশঙ্কা একধাক্কায় অনেকটাই কমানো যাবে। পরিস্থিতিও দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। ট্রেনের যাত্রী সুরক্ষায় এমনই ব্যবস্থা চালু করছে রেল। এই লক্ষ্যে ‘অন বোর্ড’ প্রত্যেক রেল কর্মীকেই যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পথে হাঁটছে মন্ত্রক। তবে শুধু ট্রেনের কোচ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ‘আনকাপলিং’য়ের প্রশিক্ষণই নয়, পাশাপাশি রেলের সবক’টি জোন ও ডিভিশনেই অগ্নি মোকাবিলা সংক্রান্ত মক ড্রিলের পরিমাণও আরও বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এক বছরে দেশব্যাপী এহেন মক ড্রিলের সংখ্যা সাকুল্যে ১০০ পেরয়নি। রেল বোর্ডের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে বলে খবর।

    রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে রেলের সবক’টি জোন এবং ডিভিশন মিলিয়ে অগ্নি মোকাবিলা সংক্রান্ত সর্বমোট ৭১টি মক ড্রিল করানো সম্ভব হয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানেই রেল বোর্ডের অন্দরে কিছুটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর দেশে অন্তত ১০০ মক ড্রিল করানো সম্ভব কি না, সেই ব্যাপারে ইতিমধ্যে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে মন্ত্রক। একইসঙ্গে রেল বোর্ড চাইছে, বিভিন্ন জোন এবং ডিভিশন এই ব্যাপারে বিশেষ সুরক্ষা অভিযানেও অংশ নিক। শামিল করানো হোক সাধারণ মানুষকেও। রেল স্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রী, হকার, স্টেশনের স্টল মালিকদের নিয়ে সেই ‘স্পেশাল সেফটি ড্রাইভ’ আয়োজন করা হোক। 

    এখানেই শেষ নয়। ট্রেনে যাতে কোনওরকম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে, সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ৩০ দফা নির্দেশিকা তৈরি করেছে রেল বোর্ড। যার মধ্যে অন্যতম, ‘আনকাপলিং’য়ের জন্য ‘অন বোর্ড’ রেল কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া। পাশাপাশি রেল জানিয়েছে, ট্রেনের প্যান্ট্রি কারে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্যান্ট্রি কারের কর্মীরা কোনও অবস্থাতেই গ্যাস সিলিন্ডার সেখানে রাখতে পারেন না। ট্রেনে ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এমনকী ট্রেনের শৌচালয়েও ধূমপান করা যায় না। লুকিয়ে ধূমপান করতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লে রেলের আইন অনুযায়ী কড়া শাস্তির বন্দোবস্ত রয়েছে। সমস্ত এসি কোচে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে যাতে যাত্রীরা অ্যালার্ম-চেইন টানতে পারেন, তার ব্যবস্থার পাশাপাশি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনে টক-ব্যাকের ব্যবস্থাও রয়েছে। মোবাইল চার্জিং পয়েন্টে ‘গ্লাস-ফিউজ’এর বন্দোবস্ত রয়েছে। এর ফলে ওভারলোডিং হলেও শর্টসার্কিটের আশঙ্কা অনেকটাই কমেছে বলে দাবি মন্ত্রকের। - ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)