বেওয়ারিশ কুকুরের মুখে নবজাতকের কাটা মুণ্ডু! হাসপাতালের বাইরে হাড়হিম দৃশ্য
আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি পাঞ্জাবে একটি ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সাক্ষী থাকলো স্থানীয় মানুষজন। ঘটনাটি ঘটেছে পাটিয়ালার এক সরকারি হাসপাতালে। সেখানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ভয়ানক দৃশ্য দেখা গিয়েছে৷ রাস্তার এক বেওয়ারিশ কুকুরের মুখে এক শিশুর কাটা মাথা দেখা গিয়েছে। এই হাড়হিম ঘটনা হাসপাতালের ভেতরে মুহূর্তে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়। খবর পাওয়ার পর, পাঞ্জাবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলবীর সিং ঘটনাটির গুরুত্ব অনুধাবন করে সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তের নির্দেশ দেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ঘটনাটি পাটিয়ালার এক সরকারি হাসপাতালে ঘটেছে৷ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডঃ বিশাল চোপড়া জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে কোনও নবজাতক নিখোঁজ নয় এবং সকল শিশু সঠিকভাবে হিসেব অনুযায়ী রয়েছে।
ঘটনার জেরে তিনি আরও জানান, সম্প্রতি যারা মারা গিয়েছে তাদের মৃত্যুর পর দেহ যথাযথ নথিপত্র সহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ডঃ চোপড়া বলেন, 'এটি এমন একটি ঘটনা মনে হচ্ছে যেখানে বাইরের কেউ নবজাতকের দেহাবশেষ ফেলে গিয়েছে।'
এদিকে, রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর এক্স (পূর্বতন টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে বলেন, 'রাজিন্দ্রা হাসপাতাল, পটিয়ালায় একটি মৃত শিশুকে ঘিরে ভয়াবহ ঘটনার খবর পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল না এবং এটি কোনও সমাজবিরোধী উপাদানের কৃতকর্ম বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমি ডেপুটি কমিশনার এবং এসএসপিকে দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি এবং অপরাধীদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। অনুগ্রহ করে কোনও গুজবে কান দেবেন না।'
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান মারফত জানা গিয়েছে, এই মর্মান্তিক দৃশ্যটি প্রথম দেখা যায় হাসপাতালের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাছে, বিকেল প্রায় ৫.৩০টার দিকে। রোগী ও তাদের সঙ্গীরা প্রথমে বিষয়টি দেখতে পান। দৃশ্য দেখে চারিদিক স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে পুরো ঘটনাটি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার জেরে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দ্রুত এর কারণ খুঁজে বার করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পথকুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট পথকুকুরদের নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত যে রায় দিয়েছিল, দেশজুড়ে প্রবল আলোচনা-সমালোচনা হয় তার। দেশের কোনায় কোনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মানুষ। নজর ছিল ২২ আগস্টের শুনানির দিকে। ২২ আগস্ট শীর্ষ আদালত ১১ আগস্টের রায় স্থগিত করেছে। বদল করা হয়েছে নির্দেশাবলীতে। কী জানা গেল পথকুকুর মামলা প্রসঙ্গে? প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১১ আগস্টের নির্দেশাবলীতে বদল করেছে শীর্ষ আদালত। আগের রায়ে বলা হয়েছিল, দিল্লি এনসিআর এলাকায়, পথকুকুর আর রাস্তায় থাকতে পারবে না। তাদের সরিয়ে নেওয়া হবে অন্যত্র। তারপর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ, পশুপ্রেমীরা।
শুক্রবার শীর্ষ আদালত ওই রায়ের পরিবর্তন করেছে। এদিন জোর দেওয়া হয়েছে পথকুকুরদের জীবাণুমুক্ত করার এবং টিকা দেওয়ার বিষয়ে। শুক্রবার আদালত জানায়, পথকুকুরদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জীবাণুকরণ প্রতিষেধক এবং বন্ধ্যাত্বকরণ টিকা দেওয়ার পর, আবার যে জায়গার কুকুর, সেই এলাকাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম হিসেবে, হালমা চালাতে পারে, অর্থাৎ হিংস্র কিংবা জলাতঙ্ক ঘটাতে পারে, এমন কুকুরদের ছাড়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছে বলে খবর সূত্রের। একই সঙ্গে সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রকাশ্য রাস্তায় আর পথকুকুরদের খাওয়ানো যাবে না। পথকুকুরদের খাওয়ানোর জন্য আলাদা, নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করতে হবে।