• বীভৎস! ১৬ বছরের কিশোরের হাতে স্টিয়ারিং! বেপরোয়া গাড়ি পথচারীকে পিষতে পিষতে টেনে নিয়ে গেল ৬০০ মিটার
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লিতে সম্প্রতি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে৷ খবর অনুযায়ী, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত একজন ১৬ বছর বয়সী কিশোর। দিল্লির সমায়পুর বদলি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, একজন স্থানীয় পথচারীকে বেপরোয়া গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মেরে প্রায় ৬০০ মিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। বুধবার এমনটিই জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে ২৩ অগাস্ট। একটি পিভিসি পাইপ কারখানার কাছে। ঘটনার জেরে পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরটি হুন্ডাই আই ১০ (i10) গাড়ি চালিয়ে বেপরোয়া গতিতে আসছিল। ঠিক এমন সময় সে পথচারী সুজিত মন্ডলকে সজোরে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর পথচারী গাড়ির নিচে আটকে যান। গাড়ির গতি এতই  তাকে দীর্ঘ পথ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।

    একজন প্রত্যক্ষদর্শী ঠিক সেই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, তিনি পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিশোর চালককে থামানোর জন্য ইশারা করেন, কিন্তু সে থামেনি, এমনকী গাড়ির গতিও কমায়নি। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা ৩২ বছর বয়সী সুজিত মন্ডলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে তিনি বুরারির একটি হাসপাতালে মারা যান।

    দুর্ঘটনার পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ট্র্যাকিং এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বরের মাধ্যমে মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত কিশোরকে শনাক্ত ও আটক করে। ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে 'অপরাধমূলক হত্যা' (culpable homicide) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে কিশোর ন্যায়বিচার বোর্ডে (Juvenile Justice Board) পেশ করা হয়েছে। বর্তমানে তদন্ত এখনও জারি রয়েছে।

    প্রসঙ্গত, ভারতে হিট-অ্যান্ড-রান ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে এমন ৬৭,৩৮৭টি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩০,৪৮৬ জন। অর্থাৎ এই হিসেব করলে দাঁড়ায় প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪ জন মারা গিয়েছেন।

    তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এনসিআরবি (NCRB)–র তথ্য অনুযায়ী, হিট-অ্যান্ড-রানে প্রায় ২.৪৫ লাখ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৩৩,২১২টি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা গিয়েছে। এটি অত্যন্ত নিম্নমাত্রার দণ্ডদানের হারকে নির্দেশ করে।

    এই ধরনের দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা দেশের মোট সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতদের প্রায় ১৮ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করেন, যা একটি গুরুতর জননিরাপত্তা সংকটের ইঙ্গিত দেয়।

    প্রসঙ্গত, আহমেদাবাদে নেহরুনগর এলাকার ঝাঁসির রানি মূর্তির কাছে সোমবার ভয়াবহ এক পথ দু্র্ঘটনা ঘটে। ভোররাতে আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে একটি বেপরোয়া গাড়ি একটি স্কুটারকে আচমকা ধাক্কা দেয়। এর ফলে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। গাড়ির গতি এতটাই তীব্র ছিল যে উপস্থিত আরও একজন গুরুতর আহত হন৷ পরে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন হাসপাতালেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ মৃতদের শনাক্ত করেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতরা হলেন জামালপুর এলাকার বাসিন্দা আকরাম আলতাফ কুরেশি (২২) এবং আশফাক জাফর আজমেরি (৩৫)। তাঁরা দু’জনই একটি অ্যাক্টিভা স্কুটারে করে শিবরঙ্গিনী ক্রসরোডের দিকে যাচ্ছিলেন।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত ২০ বছর বয়সি রোহন পারেশ সোনি নামক এক যুবক। ঘটনার দিন তিনি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ও বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। খবর অনুযায়ী, তাঁর গাড়িটি ওই স্কুটারকে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা দেয়। এতই জোরে ধাক্কা মারে যে স্কুটারটি বিকৃত হয়ে যায় এবং ঝাঁসির রানি বাসস্ট্যান্ডের গেট পর্যন্ত ছিটকে যায়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, আকরাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপরদিকে আশফাককে গুরুতর আহত অবস্থায় জিএমইআর সোলা সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সকাল ৫টা ২০ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
  • Link to this news (আজকাল)