• 'ওনাম আমাদের উৎসব নয়, দূরে থাক এই উৎসব থেকে'! মুসলিম পড়ুয়াদের উদ্দেশে উস্কানিমূলক মন্তব্য শিক্ষিকার, জানাজানি হতে তীব্র চাঞ্চল্য 
    আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেরালায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। খবর অনুযায়ী তাঁরা তাঁদেরই কিছু ছাত্র ছাত্রীকে অকারণ উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন। ত্রিশূরের কাড়াল্লুর গ্রামে একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে৷ খবর মারফত, 'ওনাম' উদযাপন থেকে ওই  দুই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের কয়েকজন মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের বিরত থাকার আহ্বান জানান৷ এই অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষিকাদ্বয়কে বরখাস্ত করা হয়েছে।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজুল উলূম ইংলিশ হাই স্কুলে। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা খাদিজা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে বলেন, 'ওনাম অন্য ধর্মের উৎসব, তাই বিদ্যালয়ে ওনাম উদযাপনের প্রয়োজন নেই।' এই বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়।

    ঘটনার জেরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই শিক্ষিকার মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত মত এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের বক্তব্য নয়। কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, 'প্রতি বছরের মতোই এবারও ওনাম উৎসব বিদ্যালয়ে জাঁকজমকভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্লাস ও পিটিএ গ্রুপে আমরা এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বার্তা দিয়েছি। তদন্তের অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।'

    অভিযুক্ত শিক্ষিকা খাদিজা ও আরেক শিক্ষিকা মোট দুটি ভয়েস মেসেজ পাঠান বলে অভিযোগ। তবে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে শুধুমাত্র একজন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। খাদিজা তাঁর অডিও বার্তায় বলেন, 'আমরা মুসলিম, আমাদের ইসলামের নিয়ম মেনে চলা উচিৎ। ওনাম একটি বহু-ঈশ্বরবাদী উৎসব, এবং এই কারণে আমাদের তা উদযাপন করা উচিৎ নয়। আমরা এবং আমাদের সন্তানরাও যেন কোনওভাবেই এই উৎসব উদযাপনে অংশ না নেই। অন্য ধর্মের প্রথা অনুসরণ করলে তা ‘শিরক’-এর দিকে নিয়ে যেতে পারে।'

    শুধু তাই নয়৷ অভিযুক্ত শিক্ষিকা আরও বলেন, শিশুদের ইসলামি সংস্কৃতিতে বড় করে তোলা উচিৎ এবং অন্যান্য ধর্মের আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে তাদের দূরে রাখতে হবে। 'আমাদের সন্তানেরা খুবই ছোট, এখনই তাদের এই বিষয়ে সচেতন করা উচিৎ। এবারের ওনামে আমরা এবং আমাদের সন্তানেরা কোনও অংশ নিচ্ছি না,'-এমন মন্তব্য করেন তিনি।

    এহেন ঘটনার জেরে ডেমোক্রেটিক ইউথ ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (DYFI) পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হলে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্যের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ বর্তমানে পুরো ঘটনা পুঙ্খনুপুঙ্খ তদন্ত করে দেখছে। এর পেছনে অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার অন্য কোনও বড় কারণ আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও। পড়ুয়াদের মধ্যে এমন বিতর্কিত এবং হিংসাত্মক মনোভাব ছড়ানোর কারণে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)