নেই ইন্টারনেট, প্রয়োজনেও যোগাযোগ করতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী! ওমর আব্দুল্লাহ বললেন, 'দশ বছরে এমন বিপর্যয়ের মুখোমুখি হইনি'
আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরে টানা প্রবল বৃষ্টি। চরম বিপর্যয়। একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মোবাইল ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড পরিষেবা এবং কলিং সুবিধা ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবারও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত ছিল। এর কারণ একাধিক স্থানে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগ একেবারে অচল হয়ে পড়ে।
এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ তিনি ঘটনার জেরে লেখেন, 'একপ্রকার প্রায় অদৃশ্য যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে লড়ছি। জিও মোবাইলে কিছুটা ডেটা চলছে, তবে কোনও ফিক্সড লাইন ওয়াই-ফাই নেই, ব্রাউজিং কার্যত অসম্ভব, বেশিরভাগ অ্যাপ খুলছে না, এক্স খুলতেও অনেক সময় নিচ্ছে, আর হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)-এ ছোটখাটো টেক্সট মেসেজ ছাড়া কিছুই পাঠানো যাচ্ছে না। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের সেই বিভীষিকাময় দিনের মতো অনুভূতি হচ্ছে।'
জানা গিয়েছে, এটি শুধু বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের মধ্যেই সীমিত ছিল না, এমনকী রাষ্ট্রায়ত্ত বিএসএনএল ( BSNL) -এর ফাইবার ও ল্যান্ডলাইন পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়। বহু জায়গায় মোবাইল ফোনে কোনওরকম কোনও সিগনাল না থাকায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। একাধিক ভূমিধস এবং টানা বৃষ্টির ফলে গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করে। নির্দেশ অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরে ইনট্রা সার্কেল রোমিং (ICR) চালু করতে বলা হয়েছে সমস্ত টেলিকম সংস্থাকে। তথ্য অনুযায়ী এর ফলে গ্রাহকরা তাদের মূল নেটওয়ার্কের বাইরে অন্য যেকোনও উপলব্ধ মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবেন, যতদিন না স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসে।
টেলিকম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, 'জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে টানা ভারী বর্ষণ এবং একাধিক ভূমিধসের প্রেক্ষাপটে এবং ২০২০ সালের দুর্যোগ মোকাবিলার এসওপি অনুযায়ী, সমস্ত টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকে (TSP) অবিলম্বে ইনট্রা সার্কেল রোমিং (ICR) চালু করতে বলা হল, যা ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর রাত ১১:৫৯ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে অথবা পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।'
এই দীর্ঘস্থায়ী যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা এমন এক সময়ে দেখা দিল, যখন রাজ্যের মানুষ আগে থেকেই টানা বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের কারণে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসা সহায়তা, এবং রোজকার জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ইন্টারনেট ও কলিং বিপর্যয় আরও সমস্যার সৃষ্টি করেছে।