আর বাড়ি ফেরা হল না, গুগল ম্যাপ দেখাই কাল! জলের তোড়ে ভেসে শেষ গোটা পরিবার ...
আজকাল | ২৮ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুগল ম্যাপ অনুসরণ করে বাড়ি ফেরার পথেই মর্মান্তিক পরিণতি এক পরিবারের। গুগল ম্যাপ দেখে যেতে গিয়ে একটি বন্ধ সেতু পারাপারের চেষ্টা করছিল গাড়িটি। মুহূর্তের মধ্যে খরস্রোতা নদীর জলের তোড়ে ভেসে যায় গাড়িটি। চোখের নিমেষে ভেসে যান পরিবারের দুই মহিলা ও দুই শিশু। কোনও মতে উদ্ধার করা হয়েছে বাকি পাঁচজন সদস্যকে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের চিতোরগড়ে। গুগল ম্যাপ অনুসরণ করে একটি বন্ধ সেতুর কাছে পৌঁছে গিয়েছিল গাড়িটি। বানাস নদীর জলের তোড়ে গাড়িটি নিমিষেই ভেসে যায়। এই দুর্ঘটনায় এক পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আরও এক শিশু এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার। ওই পরিবারের সদস্যরা তীর্থ যাত্রায় গিয়েছিলেন। সকলে মিলেই ভিলওয়ারায় ফিরছিলেন। গুগল ম্যাপ অনুসরণ করে রাতে গাড়িটি যাচ্ছিল। সেই গুগল ম্যাপ অনুসরণ করে কালভার্টের কাছে পৌঁছে যায় গাড়িটি। ওই কালভার্ট ও সেতুটিতে যান চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। নদীর উপরের ওই সেতু দিয়েই পারাপারের চেষ্টা করছিল পরিবারটি। তখনই ঘটে বিপত্তি।
সোমি- উপরেদা সেতু যান চলাচল যে নিষিদ্ধ, তা চোখে পড়েনি গাড়ির চালকের। তিনি শুধুমাত্র গুগল ম্যাপ অনুসরণ করেই সেতুর উপরে উঠে যান। কয়েক মাস ধরেই ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল করে না। যখনই গাড়িটি সেতুর উপরে উঠে যায়, তখনই আটকে পড়ে। এরপর জলের তোড়ে মুহূর্তের মধ্যে ভেসে যায়।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার জেরে ওই গাড়ির মধ্যে থাকা চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি পাঁচজন গাড়ির উপরে উঠতে পেরেছিলেন। তাই কোনও মতে প্রাণ রক্ষা পেয়েছে তাঁদের। একজন শিশু এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ। তাঁরা প্রত্যেকেই এক পরিবারের সদস্য। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, গাড়ির মধ্যে জানলা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনিই প্রথমে এক আত্মীয়কে ফোন করে বিষয়টি জানান। সেই আত্মীয়কে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় পুলিশ।
রাতের অন্ধকারেই কোনও মতে একটি নৌকা জোগাড় করে পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধারকাজ শুরু করে। মোবাইলের আলো জ্বেলে ওই গাড়ির উপরে থাকা সদস্যরা পুলিশকে উদ্ধারকাজে সাহায্য করেন। খরস্রোতা নদীর জল পেরিয়ে সেখানে পৌঁছতেই পুলিশের বেশ খানিকটা সময় লাগে। ততক্ষণে দুইজন মহিলা ও দুইজন শিশু তলিয়ে যায়। মোট পাঁচজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গুগল ম্যাপ দেখে যেতে গিয়ে, মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে অতীতেও। প্রাণ গিয়েছে তিনজনের। আর তারপরেই তদন্তের মুখোমুখি সংস্থা। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ঠিক এমনই একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর। গুগল ম্যাপ দেখে তিনজন এগোচ্ছিলেন গাড়িতে। নির্মীয়মাণ সেতুর কিছু অংশ যে ভেঙে পড়েছে তা জানতেন না চালক। জানত না গুগল ম্যাপ। মাঝপথে সেতু শেষ। গাড়ি উল্টে পড়ে যায় নদীতে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে।
পরেরদিন সকালে দেখা যায়, গাড়ি নদীতে আংশিক ডুবে রয়েছে। নদী থেকে সেতুর উচ্চতা ৫০ ফুট। নদীতে বেশি জল ছিল না। উঁচু থেকে পড়ার ফলে মৃত্যু হয়ে গাড়ি ভেতরে থাকা ব্যক্তিদের। স্থানীয়রাই খবর দেন পুলিশে। পুলিশে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের অসাবধানতাতেই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা।
বেশ কিছুদিন আগে সেতু ভেঙে পড়লেও সেতুর শুরুতে কোনও সাবধানতা বোর্ড বসানো হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই গাড়িটি ভাড়া করে বিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন দু'জন যুবক। এই ঘটনার পরেই ওই সংস্থাকে তলব করে পুলিশ। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, পুলিশ ওই অ্যাপের একজনকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।