পুজোর আর মাসখানেকও বাকি নেই! ঘরে ঘরে শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়। পুজোর পরিকল্পনাও প্রায় সারা। তাই প্রত্যেক বারের মতো এ বারেও আগেভাগেই পুজো পরিক্রমার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ঘোষণা করে দিল রাজ্য। তবে গত বছরের মতো এ বছরও পুজো পরিক্রমায় নেই ট্রাম। চলতি বছরেও শুধু সরকারি বাস ও লঞ্চে চড়েই হবে পুজো পরিক্রমা। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
এ বছর ঠাকুর দেখার জন্য ডব্লিউবিটিসি-র তরফে সড়ক ও জলপথে বাস ও লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিলছে বনেদি বাড়ির পুজো পরিক্রমা (উত্তর থেকে দক্ষিণ), শহরতলি থেকে কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজো পরিক্রমা (বারাসাত থেকে উত্তর কলকাতা) এবং জলপথে উত্তর কলকাতার বিশিষ্ট পুজোগুলি দেখার সুযোগ।
বনেদি বাড়ির পূজা পরিক্রমা
কলকাতার বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজো শহরের ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ভলভো বাসে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুরনো পুজোগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে পুজোর চার দিন। পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে এসপ্ল্যানেড ট্রাম টার্মিনাস থেকে সকাল ৮টায় পরিক্রমা শুরু হবে। ঘুরে দেখানো হবে বদনচন্দ্র রায় বাড়ি, বাগবাজার হালদার বাড়ি, বেলুড় মঠ, শোভাবাজার রাজবাড়ি, ছাতুবাবু ও লাটুবাবুর বাড়ি, রানি রাসমণির বাড়ি, বেহালা রায় বাড়ি, বেহালা সোনার দুর্গা বাড়ি এবং সাবর্ণ রায় চৌধুরী বাড়ির পুজো। জনপ্রতি ভাড়া ২২০০ টাকা। পাঁচ থেকে ১০ বছরের শিশুদের জন্য দিতে হবে ১৬৫০ টাকা। পাঁচ বছরের কমবয়সিদের জন্য কোনও রকম ভাড়া লাগবে না বলে জানানো হয়েছে। প্যাকেজে থাকছে সকালের জলখাবার থেকে মধ্যাহ্ন ভোজন। এ ছাড়াও, চা-কফি ও পানীয় জলের ব্যবস্থাও থাকছে।
শহরতলি থেকে কলকাতা— বনেদি বাড়ির পুজো পরিক্রমা
কেবল কলকাতা শহরের বাসিন্দাদের নয়, শহরতলির মানুষকেও কলকাতার সাবেকি পুজোগুলি ঘুরে দেখাবে পরিবহণ দফতর। সকাল ৮টায় বারাসাত কলোনি মোড় থেকে যাত্রা শুরু হবে। ঘুরে দেখানো হবে কবিরাজ গঙ্গাপ্রসাদ সেন পরিবারের পুজো, চোরবাগান চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো, জোড়াসাঁকো দাঁ বাড়ির পুজো, ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়ির পুজো, লাহা বাড়ির পুজো, গিরিশচন্দ্র ঘোষের পরিবারের পুজো, প্রভৃতি। ভাড়া জনপ্রতি ২৩০০ টাকা। পাঁচ থেকে ১০ বছরের শিশুদের জন্য দিতে হবে ১৭০০ টাকা।
জলপথে উত্তর কলকাতার পুজো পরিক্রমা
পূজা পরিক্রমা হবে জলপথেও। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলা ১১টায় যাত্রা শুরু হবে। প্রথমেই লঞ্চ পৌঁছবে আহিরীটোলা ঘাটে। সেখান থেকে এসি বাসে আশপাশের সমস্ত বিশিষ্ট পুজো মণ্ডপগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে। যাত্রাপথে থাকবে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো, কুমোরটুলি পার্ক ও কুমোরটুলি সর্বজনীন, জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো। নিয়ে যাওয়া হবে বলরাম মন্দির ও সারদা মায়ের বাড়িও। শেষে বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোমণ্ডপ দেখিয়ে বাগবাজার ঘাট থেকে যাত্রীদের ফের তুলে দেওয়া হবে লঞ্চে। ফের মিলেনিয়াম পার্কে গিয়েই যাত্রা শেষ হবে। পুরো সফরের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০০ টাকা। লঞ্চে জলখাবার এবং পানীয়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া এসপ্ল্যানেড ও বারাসাত থেকে ষষ্ঠী, সপ্তমী ও নবমীর দিন সকাল ৯টায় বাতানুকূল ভলভো বাস ছাড়বে। একে একে একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহী পার্ক, বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, মুদিয়ালি, শিবমন্দির, মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন ও বাগবাজার পল্লির পুজো ঘুরিয়ে দেখানো হবে। বারাসত থেকে ভাড়া জনপ্রতি ২৩০০ টাকা, এসপ্ল্যানেডের ক্ষেত্রে ভাড়া ২২০০ টাকা। দুই ক্ষেত্রেই জলখাবার ও মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা থাকছে। অপেক্ষাকৃত কম খরচে নন-এসি বাসের ব্যবস্থাও রয়েছে। ওই বাসগুলি ছাড়বে হাও়ড়া সিটিসি বাস টার্মিনাস, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো বারাসত কলোনি মোড়, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা এবং ডানলপ মোড় থেকে। ভাড়া ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।