ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং সহকারী ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (এইআরও) নিয়োগে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিল নবান্ন। সময় বেঁধে শেষ করতে বলা হয়েছে বুথ লেভেল আধিকারিকদের (বিএলও) বকেয়া নিয়োগের কাজও। প্রশাসনিক সূত্রের মতে, কিছুটা আচমকাই নবান্নের এই তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। কারণ, বুধবার সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর।
নবান্নের নির্দেশ ধরলে আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে ইআরও এবং এইআরও নিয়োগের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। বকেয়া থাকা বিএলও নিয়োগ-সহ বাকি সব কাজ সেরে ফেলতে হবে আগামিকাল, শুক্রবারের মধ্যে। বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, এই তৎপরতার নেপথ্যে দু’টি মূল কারণ থাকতে পারে। এক, বিহারের পরে এ রাজ্যেও দ্রুত শুরু হতে চলেছে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ। দুই, রাজনৈতিক ভাবে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তৃণমূল সুর চড়ালেও, প্রশাসনিক ভাবে কমিশনকে সব সহযোগিতা করতে হচ্ছে নবান্নকে।
সূত্রের দাবি, এ দিনের বৈঠকে জেলাকর্তাদের বলা হয়েছে, ইআরও পদে যেখানে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিকেরা রয়েছেন, সেখানে তা বদল করতে হবে। সাধারণত, এসডিও (মহকুমাশাসক) পদমর্যাদার আধিকারিকদেরই ইআরও হিসেবে নিয়োগ করার কথা। তবে সেই পদমর্যাদার আধিকারিক না পাওয়া গেলে সিনিয়র ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকদের ইআরও-র দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। আবার ৬১০টি এইআরও পদ ফাঁকা রয়েছে। সেগুলির ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে নিয়োগ শেষ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই বিএলও নিয়োগের কাজ চলছে। বকেয়া কাজ শেষ করতে হবে শুক্রবারের মধ্যে। প্রসঙ্গত, নতুন বিন্যাসের পরে প্রায় ৮০ হাজার ভোটকেন্দ্র বা বুথের সংখ্যা বেড়ে হবে প্রায় ৯৫ হাজার। ফলে সেই সংখ্যার পরেও বিএলও সুপারভাইজ়ার এবং ‘রিজ়ার্ভ’ হিসেবে এই পদে নিয়োগ সেরে ফেলতে হবে। সেই নিয়োগের প্রস্তাবিত তালিকা কমিশন অনুমোদন করেছে বলে খবর।
আগামী বছর বিধানসভা ভোটের কারণে এ রাজ্যে এসআইআর শুরু হওয়ার কথা এ বছরই। সংশ্লিষ্টদের অনুমান, সেপ্টেম্বরেই তা শুরু হওয়ার ইঙ্গিত এই তৎপরতার নেপথ্যে থাকতে পারে। এক কর্তার কথায়, “প্রতি বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংশোধিত এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের রীতি। মাঝে পুজো-উৎসবের দীর্ঘ ছুটি মাথায় রাখলে দ্রুত তা শুরু করার কথা।”
ভোটার তালিকা তথা নির্বাচনী কাজের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে প্রায় নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এত দিন নবান্নের তৎপরতা তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না। তবে ১৩ অগস্ট মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল কমিশন। চার জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিবিধান সংক্রান্ত আলোচনা ছাড়া, প্রাক্-এসআইআর প্রস্তুতি নিয়েও কথা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে আধিকারিকদের একাংশে।