মালদহের পরিযায়ী শ্রমিক আমির শেখের ক্ষেত্রে বিএসএফের প্রাথমিক ভাবে কোনও ত্রুটি নেই বলেই বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে দাবি করল কেন্দ্র। এ দিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে কেন্দ্রীয় সরকারের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার জানান, বিএসএফের রিপোর্ট পেলেও বিদেশি নিবন্ধক অফিস (এফআরআরও) এবং রাজস্থান পুলিশের রিপোর্ট এখনও মেলেনি। ওই রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চান তিনি। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, তিন সপ্তাহের মধ্যে এফআরও দফতরের এবং রাজস্থান পুলিশের রিপোর্ট হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে আদালতে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ নভেম্বর। বিস্তারিত রিপোর্ট বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণের বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।
মালদহের কালিয়াচকের জালালপুর থেকে রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিলেন আমির। অভিযোগ, তাঁকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করে রাজস্থান পুলিশ এবং তারপরে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। এ-ও অভিযোগ, বিএসএফ আমিরকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল (পুশ ব্যাক)। যদিও বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ার পরে বিএসএফ আমিরকে বসিরহাট পুলিশের হাতে তুলে দেয় এবং হাই কোর্টে জানায় যে আমির বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। এ দিন আমিরের বাবা জিয়েম শেখের আইনজীবী দাবি করেন, অবৈধভাবে আমিরকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পাঠানো হয়েছিল। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জিও জানান তিনি। রাজ্যের কৌঁসুলি বসিরহাট থানার রিপোর্ট কোর্টে জমা দেন আদালতে।
এ দিন আমিরও বলেন, “রাজস্থানে কাজে গিয়েছিলাম। সে রাজ্যে আমাকে দু’মাস আটকে রেখে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করে দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে আমার কেউ নেই। তার পরেও আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।” আমিরের বাবা জিয়েম শেখ বলেন, “ছেলে রাজস্থান থেকে তা হলে কী ভাবে বাংলাদেশে গেল? আমিরকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল।” রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন,“আমিরকে ফিরে পেতে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আইনি পথেই লড়াই চলবে।” দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী বলেন,“আমিরকে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করে কেন্দ্র চাপে পড়ে গিয়েছে। তাই এখন তাঁকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়নি বলে দাবি করা হচ্ছে।”