ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন মোদী! আজব দাবি ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টার, প্রধানমন্ত্রীকে দুষে কেন ওই কথা বললেন তিনি?
আনন্দবাজার | ২৮ আগস্ট ২০২৫
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের উপর ফের সুর চড়াল আমেরিকা। এক ধাপ এগিয়ে ওই যুদ্ধকে ‘মোদীর যুদ্ধ’ বলে দাবি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মোদীর যুদ্ধের কারণে আমাদের করদাতাদের লোকসান হচ্ছে।” তাঁর এই মন্তব্যে বিস্মিত হন সঞ্চালক। তিনি নাভারোকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কি (রুশ প্রেসিডেন্ট) ‘পুতিনের যুদ্ধ’ কথাটি বলতে চাইছেন?” জবাবে ট্রাম্পের পরামর্শদাতা বলেন, “আমি মোদীর যুদ্ধই বলতে চাইছি।” কেন তিনি এ কথা বলছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে নাভারো বলেন, “ভারত যা করছে, তার জন্য আমেরিকার ক্ষতি হচ্ছে।” ভারতের চড়া আমদানি শুল্ক নিয়েও আরও এক বার প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “ভারতের চড়া হারের শুল্কের জন্য আমাদের দেশের ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তিপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা রয়েছে। অর্থাৎ, তাঁর দাবি, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করলেই ইউক্রেনকে আক্রমণের রসদ পাবে না পুতিনের রাশিয়া। ট্রাম্পের এই পরামর্শদাতা আগেও একাধিক বার দাবি করেছেন যে, ভারতের মতো দেশকে তেল বিক্রি করে সেই টাকায় ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ৩০ জুলাই ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে অতিরিক্ত ও অনির্দিষ্ট একটি ‘জরিমানা’ (পেনাল্টি)-র কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। তার পরে গত ৬ অগস্ট ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কের উপর আরও ২৫ শতাংশ জরিমানা (অর্থাৎ মোট ৫০ শতাংশ) আরোপ করার কথা ঘোষণা করেন। যা ব্রাজিল ছাড়া অন্য সমস্ত দেশের উপর আরোপিত মার্কিন শুল্কের মধ্যে সর্বোচ্চ। বুধবার থেকে সেই শাস্তিমূলক শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এর প্রভাব দেশের অর্থনীতির উপর কতটা পড়তে চলেছে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এর আগে ভারতকে ‘শুল্কের মহারাজা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা। নাভারো বলেছিলেন, “ওদের শুল্কের হার এমনিতেই বেশি। ওরা শুল্কের মহারাজা। ওদের সঙ্গে আমাদের বড় মাপের বাণিজ্য ঘাটতি (আমেরিকার রফতানির তুলনায় ভারত থেকে সে দেশে আমদানির পরিমাণ বেশি) রয়েছে। তাই আমেরিকার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তা ছাড়া রাশিয়ার তেল কিনে ওরা (ভারত) আমাদের বিক্রি করে মুনাফা করছে।” সেই আক্রমণের পর এক সপ্তাহ কাটতে না-কাটতেই ফের রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য নয়াদিল্লিকে তোপ দাগলেন তিনি। আক্রমণ শানালেন সরকারি প্রধানমন্ত্রী মোদীর নাম করে।