• আমিষ-নিরামিষ ধর্ম নয়: ভাগবত
    আনন্দবাজার | ২৮ আগস্ট ২০২৫
  • বিশ্বগুরুর আচরণ কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে আজ মুখ খুললেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। পাশাপাশি আমিষ-নিরামিষ, খাদ্যাভাস নিয়ে বাড়াবাড়ি ধর্ম পালনের পথ হতে পারে না বলেই মন্তব্য করলেন তিনি। বলেন, ‘‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস বলে গিয়েছেন, যত মত তত পথ।’’ এ দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ মেটাতে সব পক্ষকে এগিয়ে আসার জন্য যেমন তিনি সওয়াল করেছেন, তেমনি স্বদেশিয়ানার হাত ধরে আত্মনির্ভর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

    বিজেপি নেতাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে ‘বিশ্বগুরু’ হয়ে উঠেছে ভারত। আর আরএসএসের ‘শতবর্ষ যাত্রা’ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সঙ্ঘপ্রধান বলেন, ‘‘বিশ্বগুরু মানেই এই নয় যে সে হাতে ছড়ি নিয়ে শেখাতে বসবে। বিশ্বগুরুর আচরণ হবে নম্র, নিজের আচরণে অন্যকে শেখাবে।’’

    এই প্রসঙ্গে আজ প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখায় জোর দিয়েছেন ভাগবত। গত এক দশকের মোদী শাসনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্কের ক্রমশ অবনতি হয়েছে। আজ ভাগবত বলেন, ‘‘পড়শি দেশগুলি অতীতে ভারতের অংশ ছিল। তাই প্রতিবেশী দেশের উন্নয়নের জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়া কর্তব্য। কারও চাপে নয়, নিজের ইচ্ছেয় আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের উন্নতি প্রয়োজন।’’ ভারতকে তার পরিধি বাড়াতে পরামর্শ দেন ভাগবত। তাঁর মতে, ভারত এমন একটি দেশ যে নিজের ক্ষতি উপেক্ষা করে অন্যের ভাল করতে এগিয়ে এসেছে। যারা ক্ষতি করেছে, তাদেরও সাহায্য করেছে।

    বিজেপি শাসনে ধর্মীয় কট্টরবাদ, ধর্মে ধর্মে বিভেদ বাড়ছে বলে সরব বিরোধীরা। বিশ্বে যে কট্টরবাদ বাড়ছে তা মেনে নিয়েছেন ভাগবত। তাঁর কথায়, ‘‘কট্টরবাদ বাড়ছে। যা কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনও ধর্মই অন্যের ধর্ম পরিবর্তনের কথা বলে না। পাশাপাশি ধর্মে-ধর্মে দূরত্ব কমাতে দু’পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে।’’ ভাগবতের মতে, ‘‘খাওয়া-দাওয়া, আমিষ-নিরামিষ দিয়ে ধর্ম বিচার ঠিক নয়। তেমনি জল, শ্মশান ও মন্দির নিয়ে বিভেদ করা উচিত নয়। কারণ, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস বলে গিয়েছেন সব ধর্মের লক্ষ্য এক। তিনি ইসলাম মতে সাধনা করে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন।’’ শুল্ক-লড়াইয়ের আবহে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার ডাক দেন ভাগবত। বলেন, ‘‘আত্মনির্ভর হওয়ার অর্থ এই নয় যে আমদানি বন্ধ করা। আমদানি-রফতানি চলতেই থাকবে। স্বদেশির অর্থ যে পণ্য ভারতে তৈরি হচ্ছে তা বিদেশ থেকে না আনা। বিদেশ থেকে সেই পণ্য এলে তা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়প্রভাব ফেলবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)